মানিক সরকারকে মনে আছে? এই প্রশ্নই এখন বাংলার রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। কারণ তাঁর নাম এখন শোনা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। বিজেপি যে বাংলার মানুষের কাছে ‘বিপদ’ তা বোঝাতেই ত্রিপুরার কথা টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকারের ‘সাবধান বাণী’ শোনা গেল তাঁর গলায়। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে তফসিলি জাতি, উপজাতিদের নিয়ে দলীয় সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানিকবাবু বলে গিয়েছেন। এখন গিয়ে দেখে আসুন, বিজেপি কী হাল করেছে ত্রিপুরার! ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি পাকা হবে কথা দিয়েছিল। চাকরিই চলে গিয়েছে!’ এনআরসি’র পরে অসমের পরিস্থিতিও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
দল ভাঙানো এবং প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করা প্রসঙ্গে ত্রিপুরার উদাহরণ সামনে এনেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘আপনাদের সামনে বড় বিপদ। কী বিপদ, সারা দেশের মানুষ বুঝতে পারছেন। ত্রিপুরায় বাঙালিদের গিয়ে জিজ্ঞাসা করে এসো। আগে বলত, সিপিএম আসিয়া ত্রিপুরা দিল ভাসাইয়া। আজ বলছে, বিজেপি আসিয়া দিল ভাসাইয়া। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে অনেকে সেখানে বিজেপিকে শক্তিশালী করে ক্ষমতায় এনেছে। ভাবছে, এখানেও সেই ফর্মুলায় কয়েকটা গদ্দারকে নিয়ে আমরা এখানে সরকার তৈরি করব।’ আর মানিক সরকার ক্ষমতায় থেকেও নিজের একটা বাড়ি করতে পারেননি। এখন পার্টি অফিসে থাকেন। এতটাই সৎ বলছেন সিপিএমের কর্মী–সমর্থকরাই।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বাংলায় সিপিএমের কর্মসূচিতে এসেছিলেন মানিকবাবু। দলীয় মুখপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলার মানুষের কাছে তাঁর আর্জি ছিল, ত্রিপুরার ভুল তাঁরা যেন এখানে না করেন। নানারকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানে ক্ষমতায় এসে বিজেপি কী হাল করেছে, ওই রাজ্যে গিয়ে তা দেখে আসার আবেদনও জানিয়েছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কথা উদ্ধৃত করে বিজেপির বিপদের কথা বলছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এখন কথায় কথায় সিপিএমের স্মরণ করছেন। মানিক সরকারের কথায় ভরসা করতে চাইছেন। কিন্তু মনে রাখবেন, যতদিন মানিকবাবুরা ছিলেন, বিজেপি ট্যাঁফোঁ করতে পারেনি!’