বয়সের কারণে টিকিট না পেয়ে ‘অভিমানে’ তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। সিঙ্গুর থেকে বিজেপির টিকিটও পেয়েছেন। তবে তাঁকে একেবারেই আক্রমণের পথে হাঁটলেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং কেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে টিকিট দেওয়া হয়নি, তা সিঙ্গুর থেকেই বুঝিয়ে দিলেন। সঙ্গে সহানুভূতিও প্রকাশ করলেন মমতা।
মঙ্গলবার সিঙ্গুরের জনসভা থেকে ‘মাস্টারমশাইয়ের’ প্রতি শুধু সহানুভূতি প্রকাশ করে ক্ষান্ত থাকেননি মমতা। বরং জানান, সিঙ্গুরের বিদায়ী বিধায়ককে তিনি সম্মান করেন। তাঁকে দলের টিকিটে না দিলেও সরকার গঠনের পর কোনও উপদেষ্টা কমিটিতে বসানোর কথা ভেবেছিলেন। তারপরও কেন ‘মাস্টারমশাই’ বিজেপিতে যোগ দিলেন, তাতে রীতিমতো অবাক মমতা। সঙ্গে সিঙ্গুরে বিজেপির প্রার্থী রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে শ্লেষ মিশিয়ে আর্জি করেন, ‘মাস্টারমশাই আপনি বাড়িতে থেকে সম্মান বাঁচান। আপনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবন কামনা করছি। কিন্তু এবারের নির্বাচনটাও আপনি বেচাকে (বেচারাম মান্না) জেতানোর জন্য আশীর্বাদ করুন। বেচা অনেকদিন আপনার সঙ্গে কাজ করেছে।' যে বেচারামের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক ছিল।
রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণাত্মক কোনও শব্দ ব্যবহার করেননি। বরং বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘ভোটে যদি জিতবি, তখন ভয় দেখাচ্ছিস কেন? একটাও তো নিজের প্রার্থী নেই, সব তো ধার করা। সব তো ধার করা। ওই আমাদের মাস্টারমশাই ছিলেন। বেচারা ৯২ বছর বয়স (৮৪ বছর আদতে), কোথায় পা টিপে দেবে, মাথা টিপে দেবে, তেল মালিশ করে দেবে, একটু সেদ্ধ মাছ রান্না করে দেবে। তা নয়, তাঁকে এই গরমের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কষ্ট হচ্ছে না লোকটার!’
বিজেপিকে লাগাতার আক্রমণও করেন মমতা। দাবি করেন, সিপিআইএমের যে ‘হার্মাদ’ এবং তৃণমূলের কয়েকজন যে ‘গদ্দার’, 'মীরজাফর' বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁদেরই প্রার্থী করে দিয়েছে বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই সিঙ্গুর থেকেই রবীন্দ্রনাথকে প্রার্থী করা নিয়ে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনশনও হয়েছে। সিঙ্গুরের প্রথম জনসভা থেকেই সেই কোন্দল উস্কে মমতা বলেন, ‘পুরনো দিন থেকে বিজেপি করলেন, তাঁরা বেচারা কেঁদে কেঁদে মরছেন, কেঁদে কেঁদে মরছেন।’