দুয়ারে বিধানসভা নির্বাচন। তাই দিনে তিনটি করে জনসভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারও বাঁকুড়ায় তিনটি জনসভায় দেখা যায় তাঁকে। কোতুলপুর, ইন্দাস এবং বড়জোড়ার তিনটি জনসভা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা সভায় মমতার নিশানায় বামেরা। কোতুলপুরের সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘গদ্দার–হার্মাদরা এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে। সেদিনের অত্যাচারের কথা কোনওদিন ভুলব না। বিক্রমপুরের গ্রামে কী অত্যাচার চালিয়েছিল কখনও ভুলব না। অনেকে বাঁচতে নদীতে ডুবে বসে থাকত। একটু জল চেয়েছিল ছেলেটা। তার মা জল আনতে গিয়েছিল। এসে দেখে ছেলের মুণ্ডু কেটে দিয়েছে হার্মাদরা। তারপর তা মায়ের কোলে তুলে দিয়েছিল।’ এখানেই থেমে না থেকে এদিন মমতা অভিযোগ করেন, ‘চমকাইতলায় বাসে গুলি চালিয়েছিল। বাস ভাঙচুর করেছিল। সেই অবস্থায় মানুষকে উদ্ধার করে এনেছিলাম।’
এরপরই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তোপের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় গেরুয়া শিবির। জণগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনটা মনে রাখবেন, বাংলার নির্বাচন। আগেরবার যাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বলব, বিজেপি বলেছিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেবো, দিয়েছে? ওরা নির্বাচনের আগে অনেক কথা বলে। আর নির্বাচন শেষ হলে পালিয়ে যায়, আর ডুগডুগি বাজায়। বাংলায় বহিরাগত গুন্ডাদের পাঠিয়েছে। মোদী গ্যাস বেলুন আর ক্যাশ বেলুন নিয়ে নেমে পড়েছেন।’
বাম–বিজেপির ডিল হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যখন বলছেন, মানুষের উপর অত্যাচারের কথা ভুলিনি। তখন প্রবল হর্ষধ্বনি দিয়ে তাঁর কথা সম্মতি জানাচ্ছিলেন কোতুলপুরের বিশাল জনগণ। তিনি বলেন, ‘আমাদের গদ্দাররা এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে। তাঁরা কী অত্যাচার করত, মনে রাখবেন। আমাকে পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছিল না। এক পা এক পা করে ঢুকেছিলাম। সালাম নামে একজনের বাড়িতে গিয়েছিলাম, বিক্রমপুরের গ্রামে। বিক্রমপুরের সেই অত্যাচার কোনওদিন ভুলব না। গোপীনাথপুরের অত্যাচারের কথা ভুলে যাইনি।’
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মমতার কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে ৯০০ করেছে বিজেপি। বিনামূল্যের চাল ফোটাতে লাগছে ৯০০ টাকার গ্যাস। বিনা পয়সায় গ্যাস দিতে হবে। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট, কোল ইন্ডিয়া, বিএসএনএল, সেল বন্ধ করে দেবে বলছে। সব বিক্রি হয়ে যাবে। খাবেন কি? আপনার ব্যাঙ্কে যা টাকা আছে, তাও বিজেপি খেয়ে নেবে। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ওরা টুকলি করে। পরিবর্তন বাংলায় হবে না, পরিবর্তন দিল্লিতে হবে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের হারাতে হবে। সব কেড়ে নিয়েছে ওরা। বিজেপিকে চাই না।’