একযোগে বাবা-ছেলেকে আক্রমণের সুর সপ্তমে তো ছিলই। এবার বাবা-ছেলের মধ্যে যে ‘টানাপোড়েন’, তাতে নয়া মাত্রা যোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে দাবি করলেন, শিশির অধিকারীকে যখন কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হয়েছিল, তখন গোঁসা হয়েছিল শুভেন্দুর। এমনকী বাবাকে নাকি ‘বুড়ো ভাম’-ও বলেছিলেন।
রবিবার বিরুলিয়া বাজারের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘কোনও একজনের বাবা মন্ত্রী হবেন, আমি মন্ত্রী করলাম সেন্ট্রালে (কেন্দ্রে), তার বাবাকে মন্ত্রী করেছি, (কিন্তু) কেন তাকে করা হয়নি বলে বাবার মন্ত্রিসভার শপথে গেল না। বুড়োভামকে মন্ত্রী করা হয়েছে বলল। আমি তোন বয়জ্যেষ্ঠদের সম্মান করি ভাই, আমি তো একথা বলতে পারব না। আজ স্বীকার করুক বা করুক, বাপ-ব্যাটার যতই বোঝাপড়া থাকুক, মনে রাখবেন, কথাগুলো সত্য।’
কারও নাম না করলেও মমতার ইঙ্গিত যে কাঁথির অধিকারী পরিবারের কর্তা এবং তাঁর ছেলের দিকেই ছিল, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। একবার তো মুখ ফস্কে শিশিরের নাম বলেও ফেলেছিলেন। পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। শিশিরের নাম প্রত্যাহার করে নিলেও মমতার ভাষণের মধ্যে সুচিন্তিত কৌশলের ছায়া দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, একদিকে মমতা ভোটারদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে স্রেফ শুভেন্দু ক্ষমতার জন্য কতদূর যেতে পারেন। সেইসঙ্গে ‘গেরুয়া’ শান্তিকুঞ্জে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করলেন মমতা।
শান্তিকুঞ্জে ফাটল ধরানোর চেষ্টার পাশাপাশি রবিবার শুভেন্দুকে আক্রমণ শানাতে নিজের একসময়ের ছায়াসঙ্গী তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কেও সাক্ষী হিসেবে তুলে ধরেন। সঙ্গে ‘বহিরাগত’ আক্রমণের পালটা দেন। মমতা বলেন, ‘(নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ের কথা বলার রেশ ধরে) এরপর কেউ যদি আমায় বলেন, আমি বহিরাগত, আর তারা ভূমিপুত্র! জিজ্ঞাসা করুন, ভূমি আন্দোলনে কোথায় ছিলেন? সূর্যোদয়ের সময় কোথায় ছিলে? ১৫ দিন বাড়ির থেকে বের হয়নি। ১০ দিন বের হয়নি। আজ আমায় ভুলে যান। বিজেপি নেতা মুকুল রয়কে জিজ্ঞাসা করুন, সে অন্তত সাক্ষী আছে, যদি সত্যি কথাটা বলে।’