অঙ্কটা স্পষ্ট। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এবং মিম যত বেশি কাটবে, তত বেশি কপাল পুড়বে তৃণমূল কংগ্রেসের। আর সেই লাভের গুড় খাবে বিজেপি। সেই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু ভোটের কাটাকাটি আটকাতে নিজেই আর্জি জানালেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার গোঘাটের জনসভায় মমতা বলেন, ‘সংখ্যালঘুরা নিজেদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি করবেন না। হায়দরাবাদ থেকে একটা বিজেপির দালাল (মিম) এসেছে। আর ওই দালালদের মধ্যে ফুরফুরা শরিফের সবাই নয়, একটা ছেলে টাকা নিয়ে বসে আছে বিজেপির থেকে। গদ্দার, গদ্দার, বড় বড় গদ্দার। এই গদ্দারদের ভোট দিয়ে নিজেদের ভোট ভাগাভাগি করবেন না।’
এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের আগে হিন্দু-মুসলিম ভোটের অঙ্ক নিয়ে কাঁটাছেড়া চলছে। মোটের উপর রাজ্যের ৩০ শতাংশ (২০১১ সালের জনসংখ্যা পরবর্তী হিসেব অনুযায়ী) মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে এতদিন তৃণমূলের আধিপত্য ছিল। কিন্তু ভোটের আকাশে আইএসএফ এবং মিমের উপস্থিতিতে সেই অঙ্কটা পালটে গিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাজ্যের কয়েকটি প্রান্তে বেশ ভালোমতো ভোট টানতে পারে আইএসএফ। মিমও কিছু ভোট কাটতে পারে। আর সেই দু'জনের ভোটব্যাঙ্ক যত মজবুত হবে, তত তৃণমূলের ভোট কমবে। ভোট কাটাকুটির অঙ্কে ফায়দা তুলবে বিজেপি। তাই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে মরিয়া মমতা। সেইসঙ্গে হিন্দু ভোটারদের মন পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মোটামুটি নিয়ম করেই প্রতিটি জনসভায় স্ত্রোস্তপাঠ, চণ্ডীপাঠ করছেন। গোঘাটেও করেছেন। যদিও সেই চেষ্টা আদৌও কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন আছে। বিশেষত বিজেপির তরফে যেভাবে মমতা ভাবমূর্তি তুলে ধরা হয়েছে, তাতে স্ত্রোস্তপাঠ দিয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানো অত্যন্ত কঠিন। সেই পরিস্থিতিতে গোঘাটে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগির না করার আর্জি জানিয়েছেন। সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণও করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের।