মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম যে এমন হাইভোল্টেজ দ্বৈরথের সাক্ষী থাকতে চলেছে, তা কার্যত পুরোপুরি নিশ্চিত। বিজেপি সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। বঙ্গ বিজেপি নেতারাও তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম দু'দফার ৬০টি আসনের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। সেখানে হাজির ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। সূত্রের খবর, বৈঠকে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াইয়ের প্রস্তাব দেন খোদ শুভেন্দু। যিনি ২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন। শুভেন্দুর সেই ইচ্ছায় প্রায় সিলমোহর পড়ে গিয়েছে। আপাতত শুধুমাত্র সংসদীয় কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা চলছে বলে জানিয়েছেন বিজেপির ওই সূত্র।
তবে নন্দীগ্রামে লড়াইটা যে মমতা বনাম শুভেন্দু হতে চলেছে, তা দিনকয়েক আগেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার বৈঠকের জন্য দিল্লিতে উড়ে যাওয়ার আগে পিংলার একটি জনসভা থেকে শুভেন্দু নিজেও সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দাবি করেছিলেন, 'নন্দীগ্রামে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।' সঙ্গে যোগ করেছিলেন, দল তাঁকে প্রার্থী করলে তিনি নিজে হারাবেন। আর অন্য কাউকে টিকিট দিলেও নিজের কাঁধে দায়িত্ব প্রাক্তন দলনেত্রীকে হারাবেন তিনি। তার আগে জানুয়ারিতে যখন তেখালিতে দাঁড়িয়ে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মমতা, সেদিনও একই সুরে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন শুভেন্দু। সেই সময় একটি অংশ থেকে প্রার্থী হিসেবে দিব্যেন্দুর নামও উঠে এসেছিল।
তবে মমতা-শুভেন্দু লড়াই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। বরং শুভেন্দুর দাবি মতো নন্দীগ্রামে মমতাকে ৫০,০০০ ভোট হারানোর বিষয়ে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসী তাঁরা। সংবাদসংস্থা এএনআইকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘নন্দীগ্রাম থেকে যে নেতাই প্রার্থী হন না কেন, তিনি মমতাকে ৫০,০০০ ভোট হারাবেন।’ সঙ্গে যোগ করেন, 'যেখান থেকেই নির্বাচনে লড়াই করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানেই কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবেন আমাদের প্রার্থীরা।'
কিছুটা হেঁয়ালি করলেও মুকুল রায় স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন যে নন্দীগ্রাম থেকে পদ্মফুলের প্রার্থী হচ্ছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘দলের কর্মীরা চান যে নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী করা হোক। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’ বিজেপি সূত্রে খবর, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কার্যত অপেক্ষা হয়ে গিয়েছেন। খাতায়-কলমে অপেক্ষা শুধু সংসদীয় কমিটির অনুমোদনের। তারপরই আজই (শুক্রবার) সম্ভবত ৬০ টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।