রাজ্য–রাজনীতিতে এখন ‘বারমুডা’ ইস্যু এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সরাসরি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বারমুডা পরার নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। যার জবাব রাজনৈতিকভাবেই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার পাথরপ্রতিমার সভায় মমতা বলেন, ‘শাড়ি পরবে না, সালোয়ার কামিজ পরবে না। ওরা হাফ প্যান্টুল পরিয়ে দেবে, ওদের বলুন যাও অনেক হয়েছে, কে কী পরবে সেটা যার যার নিজের পছন্দ।’ পুরুলিয়ায় বারমুডা মন্তব্যে জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। কিন্তু তারপরও শিক্ষা নেননি তিনি। বরং নিজের অবস্থানকে সমর্থন করে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, শাড়ি পরে পা দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করেছেন।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রিপড জিনস নিয়ে মন্তব্য করছেন। বাংলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি মুখ্যমন্ত্রীকে বারমুডা পরার নিদান দিচ্ছেন। এভাবে পোশাক ফতোয়া দেওয়ায় রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই ইস্যুকে টেনেই তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। জামা–কাপড় যার যার নিজের পছন্দ। যে যা ভাল বোঝেন তাই পরবেন।’ উল্লেখ্য, পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে প্রকাশ্য জনসভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্লাস্টার কাটা হয়ে গেল, ফের ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়ে গিয়েছে। পা তুলে সবাইকে দেখাচ্ছেন। শাড়ি পরে এসেছেন, একটা পা ঢাকা, একটা পা খোলা, এরকম শাড়ি পরতে দেখিনি। প্লাস্টার দেখাতে হলে শাড়ি কেন, বারমুডা পরতে পারেন।’ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে শোরগোল শুরু হয়। তীব্র নিন্দা করে পাল্টা টুইটও করে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন টুইট করে তৃণমূল কংগ্রেস জানায়, এমন কুরুচিকর মন্তব্য দিলীপবাবু ছাড়া আর কারও থেকে প্রত্যাশিত নয়। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে এইরকম কুরুচিকর ভাষা প্রয়োগ প্রমাণ করে যে বিজেপি নেতারা মহিলাদের সম্মান করে না। বাংলার মা–বোনেরা মমতার প্রতি এই অপমানের যোগ্য জবাব দেবে ২ মে। এরপরও নিজের মন্তব্যে অটল থেকে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘তাঁর মন্তব্য কোনওভাবেই মহিলাদের আঘাত করছে না। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার সংস্কৃতিতে আঘাত করেছেন। যার প্রতিবাদ করেছেন তিনি। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়া উচিত নয়। আর এর কোনও ব্যাখ্যাও হয় না।’
এই বিষয়ে কুণাল ঘোষে বলেন, ‘দিলীপ ঘোষকে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। একজন আহত মহিলা সম্পর্কে কীভাবে এমন মন্তব্য করলেন।’ উল্লেখ্য, ১০ মার্চ হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বিকেলে নন্দীগ্রামে জনসংযোগ সারছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাড়ির দরজা খোলা থাকা অবস্থায় তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছিলেন। ভিড়ের মধ্যে নজর রাখতে পারেননি চালক। ভিড়ের চাপে দরজা গিয়ে পড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরে। তাঁর ঘাড়ে এবং পায়ে আঘাত লাগে।