চতুর্থ দফার ভোটে রক্তাক্ত হল কোচবিহার। মৃত্যু হয়েছে ৫জনের। সকালে শীতলকুচির পাগলাপীর এলাকায় আনন্দ বর্মণ নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। এরপরই শীতলকুচি বিধানসভার মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের জোরপাটকিতে আধাসামরিক বাহিনীর গুলিতে মৃত্য়ু হয়েছে ৪জনের। একাধিক এজেন্সির প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে এই তথ্য। কিন্ত কোন পরিস্থিতিতে গুলি চালাতে বাধ্য হলেন বাহিনীর জওয়ানরা? এনিয়ে মুখ খুলেছেন কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দেবাশিস ধর।
তিনি বলেন, 'ওই বুথে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল। আচমকাই ৯টা ৪৫ নাগাদ বুথ চত্বরে একটি ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এনিয়ে বাহিনীর দুজন জওয়ান এসে বিষয়টি জানতে চান। তখনই একটা গুজব ছড়ায় যে, হয়তো তাকে সিআইএসএফের জওয়ানরা মারধর করেছে। তাতেই প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রামবাসী জড়ো হয়ে যান, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলা ছিলেন। তাদের হাতে 'লোকাল মেড অস্ত্র' ছিল। দা জাতীয় নিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। হোমগার্ডেররও আঘাত লাগে। অস্ত্রশস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা প্রচন্ডভাবে চলছিল। কুইক রেসপন্স টিমকে ডাকা হয়। সেই সময় তুমুল মারপিট বেঁধে যায়।ব্যালট ইউনিটও ছিনতাই হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।এরপরই বাহিনী ফায়ার ওপেন করে । ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। চারজন মারা গিয়েছে। তাদের বয়স ২২ থেকে ২৫। মৃতদের নাম হামিদুল মিঁয়া, সামিউল মিঁয়া, মনিরুল মিঁয়া ও নুর আলম। যারা ডিউটি করছিল তাদেরও আঘাত লাগে।পরে পুলিশ গিয়ে ব্যালট ইউনিটকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসে।'
ওয়াকিবহাল মহলের মতে তবে কি আত্মরক্ষার্থে, অস্ত্র বাঁচাতে ও ইভিএম বাঁচাতেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন বাহিনীর সদস্যরা? কেন এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করলেন বাসিন্দাদের একাংশ? কারা রয়েছে এর নেপথ্যে? বিরোধীদের দাবি গত কয়েকদিন ধরেই মহিলাদের দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোকাবিলা করার কথা বলছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তার জেরেই কি এদিন মহিলারা ওইভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন? গোটা ঘটনার তদন্তে কমিশন ও পদস্থ পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সূত্রের খবর, বাহিনীর কর্তারা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন প্রায় ১৫০জন ঘিরে ধরেছিল। এদিকে এসবের মধ্যেই রবিবার শীতলকুচিতে আসতে পারেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে রাজ্য জুড়ে কালো ব্যাজ পরে রবিবার বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। কিন্ত তার আগে পুলিশ কর্তার এই বক্তব্যতে কী অস্বস্তি বাড়ল শাসকদলের? অন্যদিকে শীতলকুচিতে এদিন সকালে আনন্দ বর্মনের মৃত্যু ঘটনায় পুলিশ সুপারের দাবি, বাইকে করে দুজন এসেছিল। আমরা এই ঘটনায় দুজনকে আটক করেছি।