দলবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে নদিয়া জেলা তৃণমূলের সহ–সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে। হুগলির পুরশুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘যাঁরা বিজেপিতে যেতে চান, তাঁরা তাড়াতাড়ি যান। না হলে ট্রেন ছেড়ে দেবে।’ তার কিছুক্ষণের মধ্যেই নদিয়া জেলা তৃণমূল সহ–সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রানাঘাট উত্তর–পশ্চিমের প্রাক্তন বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে। পদচ্যুত নেতা পার্থসারথি অবশ্য দাবি করেছেন, কেন তাঁকে এমন ভাবে সরানো হল তা তিনি জানেন না।
তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সভায় তাঁকে যোগদান করতেও নিষেধ করা হয়েছে। এই মর্মে জেলা সভাপতির চিঠি পৌঁছায় তৃণমূলের জেলা সহ–সভাপতি তথা রানাঘাট পুরসভার মুখ্য প্রশাসক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, সহ–সভাপতির পদ থেকে অপসারণের পর তাঁকে পুর প্রশাসকের পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। পুর দফতর দ্রুতই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। পার্থসারথির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘চিঠিতে লেখা হয়েছে আমায় দলবিরোধী কাজের জন্য সরানো হল। কী দলবিরোধী কাজ করলাম, তা উল্লেখ করা হয়নি। এভাবে সরানোর আগে শোকজ করা উচিত ছিল। কিন্তু তেমনটা করা হয়নি।’
যদিও এই বিষয়ে জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র বাণী কুমার রায় বলেন, ‘সভাপতি যা করেছেন, নিশ্চয়ই বুঝে করেছেন। একটা বিষয় জরুরি, দলের শৃঙ্খলারক্ষা করতে দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। সেরকম যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে সভাপতি সঠিক করেছেন এবং ভেবেচিন্তেই করেছেন।’ সূত্রের খবর, প্রাক্তন বিধায়ক পার্থসারথি বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে জানতে পেরেছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁর ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু নেতা-কর্মীদেরও তিনি বিজেপিতে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। সে কারণেই দলীয় পদ থেকে রানাঘাটের এই নেতাকে পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ–সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলেছে। যদিও সোমবার সন্ধ্যার পরেও পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমি এখনও পর্যন্ত দলেই আছি।’ জেলা সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রর ঘনিষ্ঠরা জানান, যাঁরা বিজেপিতে যোগদানের বিষয়ে মনোস্থির করেছেন, দল আর এমন কাউকে রেয়াত করতে রাজি নয়।