শিলিগুড়ি থেকে বাসে চেপে প্রায় ২০ কিলোমিটার গেলে হাতিঘিষা স্টপেজ। পিচঢালা রাস্তা থেকে নেমে গ্রামের রাস্তা ধরে কিছুটা এগোলেই সেবদেল্লা জোত। এখানেই নকশাল নেতা প্রয়াত কানু সান্যালের বাড়ি। আজ প্রায় ১১ বছর হল তিনি নেই। ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। সেই বাড়ি আজও রয়েছে। যৎসামান্য জিনিসপত্রও রয়েছে। গ্রামের মানুষ আজও বুক দিয়ে আগলে রাখেন মাটির দাওয়া, টিনের চালের ছোট্ট বাড়িটাকে। সংগঠনের কার্যালয় হিসাবেই পরিচিত এই বাড়ি। কানু সান্যালের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা হওয়ার কথা হয়েছিল এখানে। সেই কাজও অনেকটাই বাকি থেকে গিয়েছে। গেরিলা বাহিনী, কৃষক আন্দোলন সবই কার্যত আজ অতীত। রাত পোহালেই ভোট এই গ্রামে। প্রসাদুজোত, বেঙ্গাইয়াজোত, মেচি বস্তিতে ভোটের হাওয়া।।মাটিগাড়া নকশালবাড়ি কেন্দ্রের আওতায় এই গ্রাম। পাশেই ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্র। ভোট সেখানেও। ফাঁসিদেওয়া কেন্দ্রে সিপিআইএম(লিবারেশন) প্রার্থী দিয়েছে। নকলাশবাড়িতে কোনও প্রার্থী নেই তাদের। কেন নেই? এই প্রশ্নও উঠেছে ভোটপর্বে।
১৯৬৭ সালের ২৫শে মে। কৃষকদের অধিকার রক্ষার দাবিতে গর্জে উঠেছিল নকশালবাড়ি। বাসিন্দাদের একাংশের মতে, সেসময় পুলিশ হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। পরের দিনই পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। প্রাণ গিয়েছিল কৃষকের, প্রাণ গিয়েছিল কৃষক রমণীর, শিশুর। সেই শুরু। নকশালবাড়ির আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশ জুড়ে। সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন তৎকালীন যুব সমাজের অনেকেই। এরপর তিস্তা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। সেই আন্দোলনের আগুন আজ অনেকটাই নিভেছে নকশালবাড়িতে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, অতি বাম আন্দোলনের সেই সূতিকাগারে এখন নাকি আরএসএসের শক্তিশালী সংগঠন। বছর কয়েক আগে এই নকশালবাড়িতে পাত পেরে খেয়েছিলেন অমিত শাহ। ২০১৪ সালে হাতিঘিষাতে গিয়ে আদর্শ গ্রাম হিসাবে গড়ে তোলার জন্য দত্তক নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া। কথা ছিল ডিজিটাল গ্রাম হবে এখানে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি সেই স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে। ঠিক যেভাবে দিন বদলের স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে অনেকের কাছে। চারদিকে শুধুই অনুন্নয়ন। এনিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও তুঙ্গে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, অতি বাম আন্দোলনের সেই সূতিকাগারে এখন নাকি আরএসএসের শক্তিশালী সংগঠন। বছর কয়েক আগে এই নকশালবাড়িতে পাত পেরে খেয়েছিলেন অমিত শাহ। ২০১৪ সালে হাতিঘিষাতে গিয়ে আদর্শ গ্রাম হিসাবে গড়ে তোলার জন্য দত্তক নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া। কথা ছিল ডিজিটাল গ্রাম হবে এখানে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি সেই স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে। ঠিক যেভাবে দিন বদলের স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে অনেকের কাছে। চারদিকে শুধুই অনুন্নয়ন। এনিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও তুঙ্গে। |#+|
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্যই অনেক কিছু করা যায়নি। বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা ভাঁওতাবাজির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর সেই দিন বদলের স্বপ্ন, সেই সমাজ বদলের স্বপ্ন প্রসঙ্গে অপর নকশাল নেতা প্রয়াত চারু মজুমদারের পুত্র তথা সিপিআইএম(লিবারেশন) দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার বলেন, এখন তো ওখানে কৃষিই পেছনের সারিতে চলে গিয়েছে। তবে শ্রমিকের স্বার্থে আন্দোলন জারি রয়েছে। ওই সমস্ত এলাকায় এখন আরএসএসের কিছুটা দাপট রয়েছে। আদর্শ গ্রামও হয়নি। কানুবাবুর ওই আন্দোলনক্ষেত্রে এখন পয়সা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে বিজেপি। মানুষই তা প্রতিরোধ করবে।