যখন বিজেপিতে প্রথমবার যেতে চেষ্টা করেছিলেন তখন ধাক্কা দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। তারপর তাঁর আশ্রয় হয়েছিল ঘাসফুলেই। এখান থেকেই তিনি পদ্মফুলে যেতে চেয়েছিলেন। তখন হয়নি। এবার বিপদের সময় আশ্রয় পাওয়া ঘাসফুলকেই ধাক্কা দিয়ে ফের গেলেল পদ্মফুলে। তবে এবার ঠাঁই হল। হ্যাঁ, তিনি পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আর এই বারবার এদল–ওদল করার জন্য ক্ষোভ ছড়িয়েছে পাণ্ডবেশ্বরে। তার জেরে বুধবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক কার্যালয় গোবরজল দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধ’ করেছেন। উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যখন বিজেপিতে গিয়েছিলেন তখনও দলীয় কার্যালয় এভাবেই ‘শুদ্ধ’ করা হয়েছিল। এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন জিতেন্দ্রও। তবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক হিসাবে এই অফিস থেকেই সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা করতেন জিতেন্দ্র। তিনি মঙ্গলবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বুধবার সেই অফিসের দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর তা তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে। তবে জিতেন্দ্র এখন সপরিবার রয়েছেন কলকাতায়। সম্ভবত প্রার্থী–তালিকা ঘোষণার পরেই তিনি এলাকায় ফিরবেন। কিছুদিন আগে সপরিবারে একটি পাঁচতারা হোটেলে গিয়েছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সেখানে চলছিল বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক। ওই হোটেল থেকে বেরিয়ে জিতেন্দ্রর দাবি ছিল, এটা কাকতালীয়। তিনি পরিবার নিয়ে খেতে এসেছিলেন। বৈঠকে যোগ দিতে নয়। যদিও তখন তাঁর সঙ্গে মুকুল রায়ের দেখা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। এখন জানা গেল, সেই হোটেলেই জিতেন্দ্রর সঙ্গে কথা হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের।
এই পরিস্তিতিতে তিনি পাণ্ডবেশ্বরে এলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়বেন কি না তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এদিন দেখা গেল, এলাকার ব্যস্ত সিটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জিতেন্দ্রর কাটআউট রেখে তাতে জুতোর মালা পরিয়েছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। এমনকী জিতেনের কুশপুতুলও দাহ করা হয়েছে বুধবার। সুতরাং এলাকায় ফিরলে ক্ষোভের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জিতেন্দ্রর দলবদলে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করেন পাণ্ডবেশ্বরের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বিষয়ে তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখপাত্র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দলবদল করাটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’ যদিও বিজেপির স্থানীয় নেতা লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের দাবি, ‘এই যোগদানে বিজেপি আরও শক্তিশালী হবে।’