‘ক্ষোভ’ ক্রমশ বাড়ছে। বছর চারেক আগে থেকেই সপ্তম পে কমিশনের আওতায় বেতন পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীরা এখনও ষষ্ঠ বেতন কমিশন আওতায় পড়ে আছেন। বিধানসভা ভোটের আগে সেই ‘ক্ষত’ আরও গভীর করতে কোনও কসুর ছাড়লেন না নরেন্দ্র মোদী।
আজ (রবিবার) হলদিয়ার সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমালোচনায় সরব হন। সেই রেশ ধরে সপ্তম বেতন কমিশনের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। মোদী বলেন, ‘সপ্তম বেতন কমিশনও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লাগু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনও লাগু হয়নি। এমনকী আমায় তো বলা হয়েছে যে এখানকার সরকার তো নিজেদের কর্মচারীদেরও সময় মতো বেতন দিতে পারছে না।’
এমনিতেই মহার্ঘভাতা (ডিএ) এবং বেতন কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মধ্যে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ২০১৬ সালের জুনেই সপ্তম বেতন কমিশনে ছাড়পত্র দিয়েছিল মোদী সরকার। সেই পথে হেঁটে মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, গোয়া, মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীরাও সপ্তম বেতন কমিশল কার্যকর করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তখনও ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হয়নি। দীর্ঘ টালবাহানার পর গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন পেতে শুরু করেন বঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা। সেই সময় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতার ফারাকও ক্রমশ চওড়া হয়েছে। রাজ্যের কোষাগারে টাকা নেই বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার দাবি করলেও তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। বরং ক্ষোভের আঁচ পেয়ে গত বছর মমতা ঘোষণা করেন, চলতি বছরের শুরু থেকেই তিন শতাংশ হারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। করোনাভাইরাস কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা প্রদান স্থগিত রাখলেও ভোটের আগে মমতার সেই ঘোষণায় অবশ্য ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের আগে মোদী মোক্ষম ‘ক্ষত’ খুঁচিয়ে ঘা করতে চেয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় রাজ্যের কর্মচারীদের সময় মতো বেতন না দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন মোদী, তা নিয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে আগে একাধিকবার মমতা দাবি করেছেন, হাজার টানাটানি সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কারও বেতন কোপ মারেনি। মাসের পয়লা তারিখেই বেতন পেয়ে গিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী।