‘উন্নয়নের রাজনীতিতে আস্থা আছে, কিন্তু দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিতে নয়— এটাই পশ্চিমবঙ্গের বার্তা।’ সোমবার রাতে হলদিয়ার জনসভার একটি ভিডিও টুইট করে এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে বাংলায় পা রাখেন মোদী। হলদিয়ায় সরকারি অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে তিনি গিয়েছিলেন এক জনসভায়। সেখানেই রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। বাম, কংগ্রেসকেও ছেড়ে কথা বলেননি।
তৃণমূলের ‘লুকিয়ে থাকা বন্ধুদের’ থেকে সাবধান থাকতে বলে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর অভিযোগ, ‘এবার তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস একসঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিং করছে। কংগ্রেস–বামের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে কেরলে। পর্দার পিছনে খেলা চলছে, তা থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, ‘বাংলার এই বেহাল অবস্থায়র কারণ এখানকার সরকার। কংগ্রেসের আমলে দুর্নীতি ছিল। আর উন্নয়ন থমকে ছিল বামেদের আমলে। মমতার পরিবর্তনের ডাকে অনেকেই ভরসা করেছিলেন। কিন্তু আসলে দেখা গেল, মমতার শাসনের দশ বছরে শুধুই নির্মমতা। বাংলায় পরিবর্তন নয়, বাম শাসনের পুনরুজ্জীবন হয়েছে।’
মোদী এদিন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, ‘একসময় শিক্ষা ক্ষেত্রে সারা দেশকে দিশা দেখাত বাংলা। বাংলায় সেই উন্নয়নের গতিধারা কেন ধাক্কা খেল? আমি জানতে চাই, কেন বাংলা এতটা পিছিয়ে পড়ল? বাংলার মানুষ তাই এখন পরিবর্তন চাইছেন।’ বিজেপি–তে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’–এর দাবি নজরে পড়েছে বহুবার। এবার একই কথা মোদীর মুখে। তিনি বলেন, ‘বাংলার উন্নয়নের গতি আনতে ডবল ইঞ্জিন সরকার প্রয়োজন। আসল পরিবর্তন এলেই বাংলা দুর্নীতিমুক্ত হবে।’ উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ত্রিপুরাতেও বাম শাসনে কোনও উন্নতি হয়নি। বিজেপি সরকার আসার পর ত্রিপুরায় অনেক উন্নতি হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদীর কটাক্ষ, ‘দিদিকে উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন করলে রেগে যান। ভারতমাতার স্লোগান শুনলেও মমতা রেগে যান। খুব দ্রুত তৃণমূলকে রামকার্ড দেখাবে বাংলা। পিসি–ভাইপোকে উৎখাত করবে বাংলার মানুষ। তৃণমূলের তোলাবাজি, সিন্ডিকেট রাজ আর কয়েকদিন থাকবে।’ প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘অন্য রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন চালু হলেও বাংলায় হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্মচারীদের সময়মতো মাইনে দিতে পারে না। তবে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সরকার গড়ার পরই এ সব পাল্টাবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির যে টাকা পাননি কৃষকরা, সেই টাকা দেওয়া হবে।’