এবার মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল ব্যারাকপুরে। মুকুল পুত্র ও বীজপুর আসনের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়ের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর করা হয় বিজেপির একাধিক গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সক্রিয় কেন্দ্রীয় বাহিনীও। এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মুকুল–পুত্রের দাবি, মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরনোর সময় পরিতল্পনামাফিক তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার ব্যারাকপুরে তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে পুলিশকে। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলেও খবর। একজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সেখানে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়। তখনই দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু’দলের সমর্থকরা।
এই প্রেক্ষিতে এদিন শুভ্রাংশু দাবি করলেন যে, তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুভ্রাংশুর কথায়, ‘আমাকে আজ খুন করার পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বারবার খবর নিচ্ছিল আমি মনোনয়নপত্র দিয়ে কখন বের হব।’ এই ঘটনায় ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, ‘এসডিও অফিসে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নেই। তাহলে ব্যারাকপুরের কোন প্রার্থী এলাকায় নিরাপত্তা পাবেন?’পাল্টা মদন মিত্র বলেন, ‘মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলা হলে নাটক, আর বিজেপি উপর হামলা হলে হামলা।’
স্থানীয় সূত্রে খবর, দু’পক্ষের কর্মী–সমর্থকদের কেউ জয় শ্রীরাম ধ্বনি, কেউ আবার জয় বাংলা ধ্বনিতে আওয়াজ তুলতে শুরু করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূ্ত্রপাত। গ্রেফতার করা হয়েছে ৫–৬ জনকে। সূত্রের খবর, এদিন ব্যারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ডা. চন্দ্রমণি শুক্লার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ব্যারাকপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিনেতা চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর অনুগামীদের। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়ায় মহকুমাশাসকের দফতর সংলগ্ন এলাকায়। অভিযোগ, এদিন ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান রাজ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বুধবার খড়দায় শ্যামসুন্দর মন্দিরে পুজো দিতে যান রাজ চক্রবর্তী তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী শুভশ্রী ও ছেলে ইউভানও।
বারাকপুর বিএন বোস হাসপাতালে বাঁ–পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সিরাজ আনসারি নামে এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। তৃণমূল কংগ্রেসের জগদ্দল বিধানসভার প্রার্থী সোমনাথ শ্যাম দাবি করেছেন, তাঁদের এক কর্মী গুলিতে জখম হয়েছেন। বারাকপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী এই ঘটনার খবর পেয়ে গুলিবিদ্ধ সিরাজকে দেখতে যান হাসপাতালে। পুলিশ কিন্তু গুলি চালনার ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। এমনকী কোনও অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি বলে দাবি করেছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার।