তৃণমূলের বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েই কলকাতায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের ব্রাহ্মণদের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ব্রাহ্মণ ভাতার নামে চোখে ধুলো দিচ্ছে সরকার। ব্রাহ্মণ পুরোহিত নন এমন ব্যক্তিরাও ভাতা পাচ্ছেন। সমস্ত ব্রাহ্মণ ভাতা না –পাওয়া পর্যন্ত তাঁর লড়াই চলবে বলে এদিন ঘোষণা করেন রাজীববাবু।
শুক্রবার বিধানসভায় অধ্যক্ষের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েই রানি রাসমণি রোডে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সভামঞ্চে হাজির হন রাজীব। সেখানে তিনি বলেন, ‘ভাতার ঘোষণা হয়েছে। আর চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়ছে। সামগ্রিকভাবে পুরোহিতরা বঞ্চিত হয়েছেন। এ জিনিস আমরা হতে দেব না’।
ব্রাহ্মণ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকার বৈষম্য করছে বলে অভিযোগ করে রাজীব বলেন, ‘কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ যদি ভাতা পায় তাতে আমাদের আপত্তি নেই। আমরা চাই সবাই ভালো থাকুক। অন্য কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়নে সনাতন হিন্দুরা অভিযোগ করে না। আমরা চাই সবার মঙ্গল হোক। সবার মতো আমাদেরও ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা যেন বঞ্চিত না হয়। একজন পাবে আরেকজন পাবে না, এই অবিচারও আমরা কোনও দিন সহ্য করবো না’।
এমনকী ব্রাহ্মণ ভাতা বিলিতেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলের রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন মন্ত্রী। বলেন, ‘ভাতা ঘোষণা হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম এমন এমন সব লোকের নাম উঠে গেল যারা ব্রাহ্মণ পুরোহিতও নয়, অথচ ভাতাটাও পেয়ে গেল। এ এক অদ্ভূত পরিস্থিতি’।
সরাসরি না বললেও এদিনের মঞ্চে রাজীব স্পষ্ট করেন বিজেপিতেই যোগদান করতে চলেছেন তিনি। বলেন, ‘আগামী দিনে সুযোগ পেলে মানুষের স্বার্থে কাজ করবো আর ব্রাহ্মণ পুরোহিতদেরও চোখের জল মোছাবো। বার বার শুধু আমাদেরকে নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে। যেভাবে বাংলার মানুষদের সঙ্গে ছেলেখেলা হচ্ছে। ঠাকুর বলেছেন, যত মত তত পথ। আগামী দিনে যে মতে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারবো বলে মনে হবে, সেই মতকেই প্রাধান্য দেবো। মানুষ হচ্ছে আমার জীবনে শেষ কথা’।
শুক্রবার দুপুরে বিধানসভায় পৌঁছে অধ্যক্ষের কাছে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। গত শুক্রবার রাজ্যের বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রাজীব। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগদান করবেন তিনি।