বিকেলেই ডোমজুড়ের সভা থেকে বিজেপি প্রার্থী রাজীব বন্দোপাধ্যায়কে তুলোধনা করেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় পালটা দিলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ডোমজুড়ের সভায় নাম না করেই রাজীবের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘ আমি গদ্দার-মীরজাফরকে এই কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলাম। ওঁকে সেচমন্ত্রী করা হয়েছিল। তারপরই আমি বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে ওই দফতর থেকে সরিযে দিই। তারপর তাকে বন দফতরে পাঠিয়েছিলাম। আমায় ও কী বলেছিল জানেন? তাকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দায়িত্ব দিতে। যাতে সেখান থেকে টাকা খেতে পারে।’
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যাবেলায় পালটা মমতাকে নিশানা করে কটাক্ষ করলেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘খুব খারাপ লাগছে। আমি অত্যন্ত আহত। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে বাজিমাত করার জন্য উনি এতটা নীচে নামতে পারেন ভাবিনি। এতদিন একটা শিষ্টাচার বজায় রেখেছিলাম আমি। উনি আমার নেত্রী। এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমার সেচ দফতর চলে যাওয়ার পিছনে রয়েছেন বিনয় মিশ্র। তোলা তোলার জন্য ওকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল। আমি তখন বলেছিলাম, আমি এই ধরনের কাজ করি না। করবও না। তার থেকে আমায় না রাখা ভাল। আমি টাকা তুলিনি বলে, আমায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে বন দফতরে, তফসিলি জাতি-উপজাতি দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমায় রেখেছিলেন কেন? আমি তো পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তখন বলেছিলেন, মাথা ঠান্ডা কর, দেখি কী করা যায়। ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর চেয়েছিলাম পয়সা তোলার জন্য? এত নীচে নামতে পারলেন উনি? একজন মুখ্যমন্ত্রী ভোটে যেতার জন্য এত নীচে নামতে পারলেন? তার মানে অন্য মন্ত্রীদেরও উনি এভাবেই বিচার করেন! আমার মন্ত্রীপদ গিয়েছে শুধু পয়সা দিতে পারিনি বলে। জেনে রাখুন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় পয়সা তুলে দিতে পারিনি বলে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি দু'বার পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলাম। ওনার স্বচ্ছতা থাকলে উনি সত্যিটা বলুন। উনি আমায় দলে ধরে রাখার জন্য শেষদিন পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন।
‘গদ্দার’ বলা প্রসঙ্গে রাজীবের বক্তব্য, ‘উনি আমায় বলছেন গদ্দার? আগে আয়নায় মুখ দেখুন। ঘরে বিভীষণ রয়েছে বলে আমাদের মতো লোকেদের দল ছাড়তে হয়েছে। উনি জাতীয় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল তৈরি করেছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সাহায্য পেয়েছিলেন বলেই এই দলটা তৈরি করতে পেরেছিলেন। কখনও কংগ্রেসের হাত ছেড়ে বিজেপি হাত ধরেছেন। কখনও জনতা দলের হাত ধরেছেন। উনি অন্য দলের সঙ্গে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, সেটা আগে বলুন। উনি বলেছেন, আমার নাকি প্রচুর সম্পত্তি দেশে-বিদেশে রয়েছে। ওঁকে চ্যালেঞ্জ করছি, দেখিয়ে দিন কেথায় সম্পত্তি রয়েছে। যা বলবেন মেনে নেব।’