জয়ী বিজেপির পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়
বিধানসভা নির্বাচনে ১,১২,৪১৩ ভোট পেয়ে জয়ী বিজেপির পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী শংকর সিং ৮৯,৫০৩টি ভোট পেয়েছেন।
এই কেন্দ্রে এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হলেন শংকর সিং। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন কংগ্রেসের বিজয়েন্দু বিশ্বাস।
রানাঘাট চুর্ণী নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন জনপদ। রানাঘাটের রেল জংশনটি দেশভাগের আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নদিয়া জেলার একটি মহকুমা শহর ও পৌরসভা এলাকা হল রানাঘাট। এটি শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন স্টেশন। এই শহরে পৌরসভা তৈরি হয় ১৮৬৪ সালে। মহকুমা শাসক ছিলেন বিখ্যাত কবি নবীনচন্দ্র সেন। শহরের প্রথিতযশা মানুষদের মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কালীময় ঘটক, নদিয়া কাহিনীর রচয়িতা কুমুদনাথ মল্লিক, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সন্তোষকুমার বসু, অলিম্পিয়ান ফুটবলার নিখিল নন্দী, অনিল নন্দী, অজিত নন্দী-সহ প্রমুখ। শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় রাণাঘাটের জমিদার পালচৌধুরীদের বড় অবদান আছে। খেলাধুলো, নাটক, সাহিত্য পত্রিকা, বিজ্ঞান আন্দোলন এবং সংগীত জগতের নিজস্ব ঘরানাতে রানাঘাটের মানুষ বাংলার সংস্কৃতি জগতে অবদান রেখেছেন।
ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি রানাঘাট পুরসভা, তাহেরপুরের কয়েকটি এলাকা, বীরনগর পৌরসভা এবং রামনগর-১, বারাসাত, কালিনারায়ণপুর-পাহাড়পুর এবং খিস্মা গ্রাম পঞ্চায়েত গুলি রানাঘাট-১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক এবং অরবন্দি-১ ও অরবন্দি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি শান্তিপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, ফুলিয়া টাউনশিপের অন্তর্গত। রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি ১৩ নম্বর রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের (তফসিলি জাতি) অন্তর্গত। রানাঘাট পূর্ব এবং পশ্চিম কেন্দ্রটি আগে নবদ্বীপ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছিল।
২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের মীনা ভট্টাচার্যকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত রানাঘাট পূর্ব এবং রানাঘাট পশ্চিম দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র ছিল। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের অলোককুমার দাস রানাঘাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের শংকর সিংহকে পরাজিত করেন। ২০০১ সালে কংগ্রেসের শংকর সিং, সিপিআইএমের জ্যোতির্ময়ী শিকদার ও ১৯৯৬ সালে সিপিআইএমের সৌরেন্দ্রনাথ নাগকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৯১ সালে সিপিআইএমের সুভাষ বসু কংগ্রেসের নরেশচন্দ্র চাকীকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৮৭ সালে সিপিআইএমের গৌড়চন্দ্র কুণ্ডু কংগ্রেসের শরদিন্দু বিশ্বাস, ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের বিনয় চট্টোপাধ্যায় ও ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের নরেশচন্দ্র চাকীকে পরাজিত করেছিলেন।