আপাতত দু সপ্তাহ কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামের এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে।ফলে আপাতত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্বস্তি পেলেন মমতার নির্বাচনী এজেন্ট। সেইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলি ফের খোলার ব্যাপারেও স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত।
নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে এফআইআর মামলার এদিন জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হয়।প্রধান বিচারপতি এই মামলার শুনানির অনুমোদন দেন।এদিন শীর্ষ আদালতে শুনানিপর্বে শেখ সুফিয়ানের আইনজীবী বিকাশ সিং বলেন, মামলাগুলি ফের খোলা হচ্ছে সুফিয়ানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আটকানোর জন্যই।একই কথা বলেও রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভিও।আইনজীবীর এই বক্তব্য শোনার পর এদিন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিষয়ের গুরুত্ব বিচার করে কলকাতা হাই কোর্ট শুনানি চালিয়ে যেতে পারে। তবে গত ৫ মার্চ ফৌজদারি মামলাগুলি পুনরায় খোলার ব্যাপারে যে নির্দেশ জারি করেছিল হাই কোর্ট, তাতে স্থগিতাদেশ জারি করা হচ্ছে। আপাতত শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষন করেন শেখ সুফিয়ানের আইনজীবী বিকাশ সিং।আদালতকে আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।এফআইআর দায়ের হওয়ায় মামলাকারীর পক্ষে জন প্রতিনিধি আইন অনুযায়ী নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।সেই কারণে এই মামলার জরুরি ভিত্তিতে শুনানি প্রয়োজন।
প্রধান বিচারপতি প্রথমে হোলির ছুটির পরে এই মামলার শুনানি চেয়েছিলেন।এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় অনেক কিছুই ঘটে।আদালত হোলির ছুটি মিটে যাওয়ার পর সোমবার এই মামলা শুনতে পারে।তখন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী আদালতকে জানান, মামলাকারী যে কেন্দ্রে নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজ করছেন, সেখানে আগামী ১ এপ্রিল ভোট পর্ব রয়েছে।ফলে খুব তাড়াতাড়ি শুনানি প্রয়োজন।উল্লেখ্য, হোলির ছুটির জন্য আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত শীর্ষ আদালত বন্ধ থাকার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭–০৮ সালে নন্দীগ্রাম হিংসার ঘটনায় শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়।২০২০ সালে সুফিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়া হয়।এরপর অতি সম্প্রতি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন এজেন্ট হওয়ার পর শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে গত ৫ মার্চ কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়।কলকাতা হাই কোর্ট মামলা ফের শুরু করার নির্দেশ দেয়। সেই মতো কাঁথি আদালত শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ফের মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়।এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভি জানান, যেহেতু রাজ্য সরকারের তরফে এই মামলা আগেই তুলে নেওয়া হয়, তাই ওই মামলার ভিত্তিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা যায় না।হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা আইনত ত্রুটিপূর্ণ।