সপ্তগ্রামে তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত ৯৭৭২ ভোটে জয় ছিনিয়ে নেন।
সপ্তগ্রাম কেন্দ্রে এবারে তৃণমূলের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তপন দাশগুপ্ত। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন দেবব্রত বিশ্বাস। অন্য দিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন কংগ্রেসের পবিত্র দেব।
রূপনারায়ণের তীরেই অবস্থিত ছিল প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত বন্দর তাম্রলিপ্ত। সপ্তম শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে সরস্বতী নদী হুগলি নদীর দিকে তার বর্তমান খাতটিতে সরে আসতে শুরু করে। দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে সরস্বতী নদী এমন একটি অবস্থায় আসে, যে অবস্থায় ত্রিবেণীতে হুগলি নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে পশ্চিমে হুগলির সমান্তরালে কিছু পথ অতিক্রম করে বর্তমান গার্ডেনরিচের অপর তীরে বেতরে পুনরায় হুগলিতে এসে পড়েছিল। এইভাবে সরস্বতী একটি চক্রাকার পথের সৃষ্টি করে। সপ্তগ্রাম বন্দর এই পথের উত্তরভাগের দক্ষিণ তটে অবস্থিত ছিল।সপ্তদশ শতাব্দীতে সরস্বতী নদী মজে যেতে শুরু করে এবং ধীরে নৌ-চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
সপ্তগ্রাম বা সাতগাঁও ছিল মধ্যযুগীয় বাংলার একটি অন্যতম প্রধান বন্দর ছিল। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরও ছিল। হুগলির ব্যান্ডেল শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে এই শহরটি অবস্থিত ছিল। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এই অঞ্চলটি একটি প্রায়-গুরুত্বহীন হাট-অঞ্চলে পরিণত হয়। পলি পড়ে সরস্বতী নদী শুকিয়ে যাওয়ার জন্য এই বন্দর-নগরীর পতন ঘটেছিল। তবে পরবর্তীকালে কলকাতা নগরীর বিকাশ ও উত্থানে সপ্তগ্রামেরও একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাতগাঁওয়ের বিপরীত দিকের নদীতে পলি পড়ে তার ভাগ্যকেই উজ্জ্বল করে তুলেছিল।
সপ্তগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮৮ হাজার ২০৮। তিনি তাঁর নিকতটম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের দিলীপ নাথকে ১৮ হাজার ৫৬৭ ভোটে হারিয়েছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ১৬ হাজার ৪৯৪ ভোট।