ঘটা করে দিল্লি থেকে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে ফেলল বিজেপি। কিন্তু প্রার্থী নিজেই লড়তে চাইছেন না। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল খাস কলকাতার বুকে। চৌরঙ্গী কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শিখা মিত্র ভোটে দাঁড়াতেই চাইছেন না। তাঁর দাবি, আপত্তি সত্বেও তাঁর সঙ্গে কথা না বলেই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। ভোটে দাঁড়াব না।’ একজন প্রার্থী ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে আপত্তি তোলায় বিজেপির অস্বস্তি যে বাড়ল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উল্লেখ্য, শিখা মিত্র প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের স্ত্রী।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর এই বিষয়ে আপত্তি জানালেন সোমেন মিত্রের ছেলে রোহনও। তিনি বলেন, ‘বাবাকে ছোট করে কিছু করব না। আমাদের পরিবার সোমেন মিত্রর পরিবার। মৃত্যুকালে বাবা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে ছোট করে কিছু করব না।’ অর্থাৎ যতই শুভেন্দু অধিকারী বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে প্রার্থী তালিকায় নাম তুলুন না কেন বেঁকে বসলেন তাঁরা। আর তাতে শুধু বিজেপির নয় শুভেন্দুর অস্বস্তিও বাড়ল। কারণ তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এই নাম প্রস্তাব করেছিলেন।
সম্প্রতি সোমেন মিত্রের বাড়িতে যান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে শুভেন্দুর সঙ্গে রোহন, শিখা দু’জনের কথা হয়েছিল। দেখাও হয়। কিন্তু তারা অবশ্য পরে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেনি। এদিন দুপুরে প্রার্থী হওয়ার কথা যখন জানতে পারেন, হতবাক হয়ে যান শিখা। তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, ‘আমি নিজেই বলেছি, দাঁড়াচ্ছি না। মিথ্যা কথা।’ এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই সোমেন মিত্রের বাড়িতে যান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে কি কথা হয়েছে তা কেউ প্রকাশ্যে আনেননি।
আবার বেলগাছিয়া–কাশীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী নিয়েও বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে। এখানে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক মালা সাহার স্বামী তরুণ সাহাকে। প্রার্থী ঘোষণার পর তিনি জানিয়েছেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। ফলে প্রবল ডামাডোল শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে। প্রথম চার দফার প্রার্থী তালিকা নিয়ে ব্যাপক গণ্ডগোল দেখা দিয়েছিল রাজ্যজুড়ে। কারণ প্রার্থী পছন্দ হয়নি কর্মী–সমর্থকদের ও টিকিট না পাওয়া নিয়ে। এখন দেখা গেল প্রার্থী হতেই চাইছেন না অনেকে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটা তৃণমূল কংগ্রেসকে যেমন অক্সিজেন দেবে, তেমনই বিজেপির ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।