মাস্টারমশাই আপনি কিছু দেখেননি বলারও আর উপায় নেই। বাসিন্দারা বলছেন, মাস্টারমশাই সবই দেখেছেন। সিঙ্গুর আন্দোলন থেকে টাটাদের ফিরে যাওয়া, সিঙ্গুর সরণি ধরে মমতার উত্থান থেকে ২১শের বঙ্গযুদ্ধে সিঙ্গুর আসনে তাঁর শোচনীয় পরাজয়। সবই দেখেছেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। একাধিকবার দেখা গিয়েছে তাঁর অভিজ্ঞতাকে সম্মান জানাচ্ছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু সেই মমতারও সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত সেই সিঙ্গুর আসনেও রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে হারিয়ে জয় হাসিল করলেন বেচারাম মান্না। হেলায় হারিয়ে দিলেন এমন বলাটা ঠিক হবে না। তবে হার তো হারই। এমনটাই তো বলছেন বাসিন্দারা। ভোটের ফলাফল বেরনোর পর দেখা গেল, শুধুমাত্র সিঙ্গুরের জমি ধরে রাখাই নয়, বিজেপির টিকিটে দাঁড়ানো রবীন্দ্রনাথের থেকে ২৫ হাজার ৯১২ ভোটে এগিয়ে থেকে জয়ী হয়েছেন বেচারাম মান্না। হরিপাল আসনটি তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনেও ২৩ হাজার ৭১ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বেচারামের স্ত্রী করবী মান্নাও।
তবে বেচারামের সঙ্গে বিরোধিতার জেরেই ভোটের আগে দল ছেড়েছিলেন সপুত্র রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সিঙ্গুর আসন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে উৎকন্ঠাও কিছু কম ছিল না। এর উপর সিঙ্গুরে টাটাদের ফিরিয়ে আনা নিয়ে যখন আশ্বাস দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় তখন আরও চিন্তায় ছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু রবিবার ইভিএম খুলতেই সব চিন্তার অবসান। মান রেখেছেন বেচারাম। শুধু মানই নয়, ভোটে জিতে নাম না করে বেরারামের নিশানায় সেই মাস্টারমশাই। বেচারাম বলেন, ‘সিঙ্গুর রাহুমুক্ত হয়েছে। মানুষ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছে তা আরও একবার প্রমাণ হল।’ তাঁর স্ত্রী করবী বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধামন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই। আর দাদা বৌদির এই জয়ে ততক্ষণে উল্লাস সিঙ্গুরে।’