মা–মাটি–মানুষের সরকারই আসছে। এ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই— সোমবার রেশন ডিলারদের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রকে একহাতে নিয়ে এ কথাই বললেন আত্মপ্রত্যয়ী মমতা। গত শনিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি–তে গিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়ারা। এদিনের ‘অরাজনৈতিক’ সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁদেরও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার কটাক্ষ, ‘কয়েকটা চোর–ডাকাত হঠাৎ প্রচুর টাকা করে ফেলেছে। সেই টাকা রক্ষা করার জন্য গোবর্ধনের কাছে জমা রাখতে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কে গোবর্ধনের একটা লকার আছে না? সেখানে জমা রাখতে যাচ্ছে। আর বিজেপি ওয়াশিং মেশিনে কালো টাকা ঢুকছে আর সাদা হয়ে বেরিয়ে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওদের নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই। কারণ ওদের আমিই টিকিট দিতাম না। যাঁরা খারাপ করেছে তাঁদের টিকিট দেব কেন? অনেকে ভাল কাজ করেছেন তাঁদের টিকিট দেব।’
গলায় আত্মপ্রত্যয়ের সুর নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘আমি এটুকু বলে রাখি, মা–মাটি–মানুষের সরকারই আসছে। এ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিজেপি গ্যাস বেলুন। মিডিয়া–তে বেঁচে আছে। রাস্তায় এজেন্সি দিয়ে অনেক ঝান্ডা লাগাচ্ছে। ওরা এজেন্সি দিয়ে পতাকা লাগাক, মিডিয়ায় বেঁচে থাক। আর আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের জোড়া ফুল আপনাদের হৃদয়ে বেঁচে থাক।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত রেশন ডিলার ও চাল, গম মিলের মালিকদের প্রতি মমতার বার্তা, ‘আপনারা এটুকু আমায় দিন। বাদবাকি আপনাদের ভবিষ্যত আমি আসতে আসতে দেখে দেব।’
মমতার আরও পরামর্শ, ‘এক–একটা কর্মী এলাকা সঙ্ঘবদ্ধ করার দায়িত্ব নেবেন। ভোটের সময় ওরা (বিজেপি) টাকা দিতে পারে। টাকা দিলে ভাল করে মাংস–ভাত খেয়ে নেবেন। কিন্তু ভোটের বাক্সে উল্টে দেবেন। টাকা দিয়ে যেন ভোট কিনতে না পারে।’ বিজেপি–কে মমতার কটাক্ষ, ‘আজ সবাই বঙ্গাল–বঙ্গাল করছে কেন? আমাদের সঙ্গে বিজেপি–র তফাৎ হল, আমরা কাজ করে বলি। আর ওরা নির্বাচনের সময় কাজ না করেও বলে আর যেটা করবে বলে সেটা করে না।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় নামমাত্র চাল পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের কাছ থেকে কেনে কেন্দ্র। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্র সরকার বড় বড় কথা বলে। অথচ ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া দেয় পচা চাল। আমাদের (পশ্চিমবঙ্গের) চাষীরা যে ভাল চাল দেয়, সেটা না দিয়ে পচা চাল দেয় ফুড কর্পোরেশন। তাও ওরা উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ টন চাল কেনে। আর বাংলা থেকে কিছুই কেনে না। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্র মাত্র ৬৯ হাজার টন চাল কেনে। আর আমরা (রাজ্য সরকার) চাষীদের থেকে ৪৫–৫০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করি। এবং সেই চাল কিনে আমরা রেশনে দিই।’