এই বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিকাশ রায়চৌধুরী। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে দাঁড়াচ্ছেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে দাঁড়াচ্ছেন কংগ্রেসের চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়।
বীরভূম জেলা হল এই রাজ্যের একটি প্রশাসনিক একক। জেলাটি বর্ধমান বিভাগের অন্তর্গত৷ এই জেলার সদর দফতর সিউড়ি শহরে অবস্থিত। বোলপুর, রামপুরহাট ও সাঁইথিয়া এই জেলার অপর তিনটি প্রধান শহর। বীরভূম জেলার পশ্চিমে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, দুমকা ও পাকুড় জেলা ও অপর তিনদিকে মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা অবস্থিত।বীরভূমকে বলা হয় ‘রাঙামাটির দেশ। এই জেলার ভূ-সংস্থান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলার তুলনায় একটু আলাদা। জেলাটির পশ্চিমাঞ্চল ছোটোনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ একটি এলাকা। এই অঞ্চলটি পশ্চিমদিক থেকে ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে এসে মিশেছে পূর্বদিকের পলিগঠিত উর্বর কৃষিজমিতে।
সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্র বীরভূম জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র। ২০১১ সালে রাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি অবলুপ্ত হয়।এই বিধানসভা কেন্দ্রটি সিউড়ি পৌরসভা, সিউড়ি-১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, রাজনগর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, চিনপাই, গোহালিয়াড়া, পারুলিয়া ও সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি দুবরাজপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলির অন্তর্গত। সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রটি বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী অশোককুমার চট্টোপাধ্যায় জিতেছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯৪ হাজার ৩৬৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএমের ড. রামচন্দ্র ডোম। তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ২২৮৷ তৃণমূল প্রার্থী অশোককুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের ড. রামচন্দ্র ডোমকে ৩১ হাজার ৮০৮ ভোটে পরাজিত করেছিলেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের স্বপনকান্তি ঘোষ তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের আবদুল গফফরকে পরাজিত করেছিলেন।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের তপন রায় সিউড়ি কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের স্বপনকান্তি ঘোষকে পরাজিত করেছিলেন।২০০১ সালে সিপিআইএমের ব্রজ মুখোপাধ্যায় এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের সুনীতি চট্টরাজকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে কংগ্রেসের সুনীতি চট্টরাজ সিপিআইএমের তপন রায়কে পরাজিত করেছিলেন। আবার ১৯৯১ ও ১৯৮৭ সালে সিপিআইএমের তপন রায় কংগ্রেসের সুনীতি চট্টরাজকে দু’বার পরাজিত করেছিলেন। তার আগে ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের সুনীতি চট্টরাজ সিপিআইএমের কেশব দাস ও ১৯৭৭ সালে সিপিআইএমের অরুণকুমার চৌধুরীকে এই আসনে পরাজিত করেছিলেন।
১৯৭২ সালে কংগ্রেসের সুনীতি চট্টরাজ সিউড়ি আসনে জিতেছিলেন। ১৯৭১ ও ১৯৬৯ সালে এসইউসি’র প্রতিভা মুখোপাধ্যায় এই আসনে জয়ীহয়েছিলেন। ১৯৬৭ ও ১৯৬২ সালে কংগ্রেসের বৈদ্যনাথ বন্দোপাধ্যায় জিতেছিলেন। ১৯৫৭ ও ১৯৫১ সালে সিউড়ি কেন্দ্রটি যৌথ আসন ছিল। তার মধ্যে একটি তফসিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত ছিল। ১৯৫৭ সালে সিপিআইয়ের তুর্কু হাঁসদা ও পিএসপি’র মিহিরলাল চট্টোপাধ্যায় উভয়ই এই যৌথ আসনে জয়ীহয়েছিলেনন। আবার ১৯৫১ সালে কংগ্রেসের নিশাপতি মাঝি ও গোপিকাবিলাস সেনগুপ্ত উভয়ই এই যৌথ আসনে জিতেছিলেন।