ভোট যত এগোচ্ছে, ততই কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষে মাতছে দুই যুযুধান শিবির তৃণমূল–বিজেপি। বাক–যুদ্ধের ময়দানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। এমনকী, ব্যক্তিগত আক্রমণ পর্যন্ত শানানো হচ্ছে বলে অভিয়োগ উঠেছে। এবার সেই আসরে নামলেন দুই যুযুধান শিবিরের রাজনৈতিক নেতারা। বাক–যুদ্ধে একে অপরকে কটাক্ষ করলেন কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। একদা তাঁরা একসঙ্গে ঘর করতেন। তবে অধুনা পৃথক ছাতার তলায় গিয়েছেন।
এক সভায় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী যতই ভদ্র সেজে থাকুন না—কেন, তোমার মধ্যে জন্তু লুকিয়ে আছে।’ পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, ‘যত করবে তত ভাল, বাংলার মানুষ এই ধরনের অসভ্যতাকে সমর্থন করেনি।’ প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই, তাঁকে আক্রমণ করে আসছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই তা আরও জোরাল হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
হুগলির ডানকুনিতে বিজেপির সভা থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘পাড়ায় পাড়ায় এখন মদের দোকান হয়েছে। সেখানে আড়াই টাকা করে প্রত্যেক মদের বোতলে ভতিজা ভেট দিতে হয়।’ এমনকী তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সাংসদ তো দু’টাকার পাউচ আর একটা কুমরো নিয়ে ঘোরেন।’
রাতেই ফের বাঁকুড়া শহরে তৃণমূলের কর্মীসভা থেকে শুভেন্দুকে পাল্টা উত্তর দেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘শুভেন্দুর পরিবারে এখনও দু’জন তৃণমূলের সাংসদ রয়েছেন।’ তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘শুনুন শুভেন্দুবাবু, আপনাকে বলে রাখি, ছোটবেলা থেকে পাউচ খাওয়ার অভ্যাস বাড়ি থেকে শিখেছেন। আর রাতে বন্ধ ঘরে কত কুর্কীতি করেছেন সেটা আমাদের অজানা নয়।’
উল্লেখ্য, নারদ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁকে নিশানা করতে পিছু পা হচ্ছ না—তৃণমূল। এবার তাঁর আরও দুর্নীতি ফাঁস করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন হুঁশিয়ারি দেন, ‘পর্দা ফাঁস করে দেব তোমার, তুমি কি জিনিস, তা আমরা জানি। ইট যদি মারো, পাটকেল তো খেতেই হবে।’
যদিও শুভেন্দু পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘অনিল বসুদের মুখ মনে পড়ে যাচ্ছে। বিনয় কোঙারদের মুখ মনে পড়ে যাচ্ছে। পা তুলে আরও ভাল করে নাচতে বলুন।’ ব্যক্তিগত স্তরে এই বাকযুদ্ধে চরম পর্য়ায নিয়েছে তৃণমূল—বিজেপি দুই শিবিরে। তবে কুর্সি দখলের লড়াইয়ে শেষ হাসিটা কার মুখে ফুটবে, তা জানা যাবে ২ মে।