তৃতীয় দফা ভোটের মুখেই আগ্নেয়াস্ত্র—সহ গ্রফতার করা হল বজবজের বিজেপি বুথ সভাপতি বিশ্বজিৎ পোল্লেকে। ধৃতকে জেরা করে প্রচুর তাজা বোমার হদিশ পেল বজবজ থানার পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুয়ায়ী উদ্ধার করা হয়েছে বোমাগুলি। ভোট মরশুমে এই ঘটনাকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বজবজে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি জেরার মুখে নিজেই ভোটে ব্যবহারের জন্য গোপন জায়গায় বোমা তৈরি করে মজুত রাখার কথা জানায়। পুলিশকে নিয়ে গিয়ে বোম উদ্ধারে সাহায্যও করে সে। পুরো ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বজবজ থানায় ফোন করে এই তথ্য দেন। তিনি জানান, বজবজের গোবরঝুড়ি খালের ধারে এক ব্যক্তি হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। এই খবর পাওয়ামাত্রই আর দেরি করেননি বজবজ থানার পুলিশ। সাদা পোশাকে তারা হানা দেয় ওই এলাকায়। একটি ওয়ান শটার-সহ বিশ্বজিৎ পোল্লে নামে বিজেপির ওই বুথ সভাপতিকে আটক করে পুলিশ। তাকে থানায় নিয়ে আসার পর জানা যায়, ধৃতের বিরুদ্ধে বজবজ থানায় আগেও একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বহুদনি পলাতক ছিল ওই ব্যক্তি। আগ্নেয়াস্ত্রটি তার কাছে কীভাবে এল, তা জানতে চায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই বিজেপি নেতা জানান, ভোটে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য প্রচুর বোমাও মজুত রাখা হয়েছে। এমনকী, নিজের বাড়ির সামনেও পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বোমা ফাটানোও হয়েছে।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিশ্বজিতের কাছ থেকে তা জানতে পেরেই বজবজ থানার আধিকারিকরা বুইতার দাসপাড়া সংলগ্ন পুরনো তারা মা মন্দিরের পিছনের জঙ্গলে তল্লাশি চালান। জঙ্গলের ভিতরে দু’টি ব্যাগের খোঁজ পাওয়া যায়। তার ভিতর থেকে ২১ টি তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এই বিপুল পরিমাণ তাজা বোমা থানায় নিয়ে আসার ঝুঁকি নেননি তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থলেই বম্বস্কোয়াড ও দমকলকে ডেকে পাঠানে হয়। এরপর সেখানেই বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়। শুক্রবার বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে অস্ত্রআইন ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর তাকে আলিপুর আদালতে পাঠানো হয়।
বিজেপির জেলা নেতা সুফল ঘাঁটুর অভিযোগ, ‘বিশ্বজিৎ পোল্লে বুইতা অঞ্চলের ৪ নম্বর মণ্ডলে দলের বুথ সভাপতি। ভোটের আগে বিজেপিকে অপদস্থ করতেই নিখুঁত পরিকল্পনা করে কর্মীদের ফাঁসাচ্ছে তৃণমূল।’
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।এপ্রসঙ্গে বজবজ কেন্দ্রের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক জাহাঙ্গির খান বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের দল বিজেপি। বিজেপির ওই নেতা বিশ্বজিৎ পোল্লেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ। ভোটে সন্ত্রাস করতেই বোমা মজুত করেছিলেন ওই বিজেপি নেতা। ওদের কাজই এলাকায় অশান্তি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করা। এখন তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কোনও লাভ হবে না।’
চতুর্থ দফায় ভোট বজবজ কেন্দ্রে। ভোটের আগে অতগুলি বোমা উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে ওই এলাকায়। এদিনে ভাঙড় থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪১ টি তাজা বোমা।