দিলীপ ঘোষের ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি’ মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস। শেষ চার দফায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুরও আর্জি জানানো হল। সেইসঙ্গে অভিযোগ তোলা হল, দিলীপের মন্তব্যেই ইঙ্গিত মিলছে যে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে লেখা একটি চিঠিতে তৃণমূল দাবি করেছে, শীতলকুচিতে 'নৃশংস, ঠান্ডা মাথায় চার নিরীহ মানুষকে হত্যার' ঘটনার নিন্দার পরিবর্তে নির্বাচনে একইরকম 'হিংসা' চালানোর জন্য ‘উৎসাহ’ দিয়েছেন দিলীপ। যে ভোটাররা 'কেন্দ্রীয় বাহিনীর বেআইনি কাজ বা আচরণের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানাতে' যাবেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে তাঁদের আদতে প্রত্যক্ষ হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের আরও অভিযোগ, দিলীপের মন্তব্য থেকেই ইঙ্গিত মিলছে যে শীতলকুচিতে হিংসার ঘটনায় মদত দিয়েছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের একজন 'তারকা প্রচারকের' (নাম করা হয়নি) নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী সেই ‘হিংসা’ কার্যকর করেছিল বলে অভিযোগ তৃণমূলের।
রবিবার বরাহনগরের সভা থেকে শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যু প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘ওই দুষ্টু ছেলেরা কাল গুলি খেয়েছে কোচবিহারে শীতলকুচিতে। এই দুষ্টু ছেলেরা থাকবে না বাংলায়। সবে শুরু হয়েছে। যারা ভেবেছে সেন্ট্রাল ফোর্স শুধু বন্দুকটা দেখানোর জন্য নিয়ে এসেছে, তারা বুঝেছে ওর গুলির গরম কীরকম। আর এটা সারা বাংলায় হবে। কেউ যদি আইন হাতে নিতে আসে, তাহলে তাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। আমি আশা করব, ১৭ তারিখ সেই দিন আসছে, যেদিন আপনারা সকালবেলা গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে দিন। সেন্ট্রাল ফোর্স বুথে থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না, তাহলে আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলকুচি দেখেছেন আপনারা কী হয়েছে, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে। সেজন্য সাবধান থাকুন। ’
সেই মন্তব্যের জন্য দিলীপের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল। ফৌজদারি মামলাও দাবি তোলা হয়েছে। সেইসঙ্গে ‘হুমকির জন্য’ পঞ্চম থেকে অষ্টম দফা পর্যন্ত দিলীপের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।