নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই চরমে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক উত্তাপ। একে অপরকে আক্রমণের কোনও সুযোগ ছাড়ছে না তৃণমূল ও বিজেপি। আক্রমণ করলেই বিপরীত পক্ষ থেকে মিলছে প্রত্যাঘাত। যেমন বৃহস্পতিবার নামখানার সভা থেকে অমিত শাহের করা মন্তব্যকে প্রত্যাঘাত করল তৃণমূল। এদিন শাহের অভিযোগ খণ্ডন করে ৯টি পয়েন্টে বিবৃতি জারি করেছে তৃণমূল। তাতে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করা হয়েছে শাহের বিবৃতিকে।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে শাহের অভিযোগ খারিজ করে তৃণমূলের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, আমফানে মোট ক্ষতি হয়েছিল ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বয়েকা রয়েছে ৭৭,০০০ কোটি টাকা। এছাড়ও কেন্দ্রের কাছে প্রায় ৩২,০০০ কোটি টাকা পায় রাজ্য।
শিক্ষকদের দুরবস্থা নিয়ে শাহের মন্তব্য অস্বীকার করে তৃণমূলের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, এই মাসেই রাজ্যে ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। সঙ্গে নেপালি, হিন্দি ও উর্দু বিদ্যালয়ে ৫০০ পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করেছে রাজ্য। পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে বছরে ৩ শতাংশ হারে।
মহিলা সংরক্ষণ নিয়েও শাহের সামনে রাজ্য সরকারের কৃতিত্ব তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত স্তরে ৫০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ করেছে তৃণমূল সরকার। লোকসভা ও রাজ্যসভায় তৃণমূলের মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব যথাক্রমে ৪১ ও ৩১। উলটে বিজেপি মহিলা সংরক্ষণ নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেনি বলে দাবি করা হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের কল্যাণে তৃণমূল সরকার কিছু করেনি বলে যে দাবি করা হয়েছে তাও খণ্ডন করেছে তৃণমূল। তাদের কল্যাণে সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তার বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে। তুলে ধরা হয়েছে জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের সাফল্যের কথা।
সুন্দরবনের পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। কী ভাবে সুন্দরবনের যোগাযোগব্যবস্থা সুগম করা হয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে তারও।
বিজেপি কর্মীর খুনের পরিসংখ্যানের পালটা তৃণমূলের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে ১৯৯৮ সাল থেকে তাদের ১০৬৭ জন কর্মী খুন হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে তৃণমূলের এই বিবৃতি প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্কপ্রসূত। এর আগেও বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধীপক্ষের অভিযোগ তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে খণ্ডন করেছেন তৃণমূলের ভোট স্ট্রাটিজিস্ট। তাতে সুফলও মিলেছে। প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে দিল্লির মতো রাজ্যে উন্নয়নের কথা বলে বিজেপির মতো শক্তিকে রুখে দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এবার কি পশ্চিমবঙ্গেও সেই রণনীতি কাজে লাগাতে চাইছেন তৃণমূলের ভোট কৌশলী?