রবিবাসরীয় বারবেলায় তেতে উঠল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেই। জ্বালাময়ী ভাষণে রবিবার শুভেন্দু অধিকারীকে তুলোধনা করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরাসরি তাঁকে ঘুষখোর বলে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের বুকের পাটা নেই। কেউ আমার নাম নিতেই সাহস পায় না। আসলে অভিযোগ সত্যি হলে নাম নেওয়া যায়। ওদের অভিযোগ তো মিথ্যা। কিন্তু আমি নাম নিয়ে বলছি, শুভেন্দু অধিকারী ঘুষখোর।’
রবিবারের সভার শুরু থেকেই বিরোধী গেরুয়া শিবিরকে তোপ দাগেন অভিষেক। প্রথমেই ‘যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে আবার হাওয়াই চটি’ স্লোগান দিয়ে সভা শুরু করেন তিনি। তারপর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণে সরব হন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, জিএসটির টাকা আটকে ভাতে মারতে চাইছে কেন্দ্র। অভিষেক বলেন, ‘দিলীপ ঘোষরা বলছেন, স্বাস্থ্যসাথী আসলে ভাঁওতা। আবার ওনার পরিবারের লোকেই গিয়ে কার্ড নিচ্ছে। উন্নয়ন ও পরিসংখ্যানের নিরিখে লড়াই হোক। ১০–০ গোলে হারাতে না পারলে রাজনীতিতে পা রাখব না।’
গত বৃহস্পতিবার আইনজীবীর মাধ্যমে শুভেন্দুকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন অভিষেক, তাতে সারদা, নারদ কেলেঙ্কারিতে শুভেন্দুর যুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। অভিষেকের আইনজীবী লিখেছেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে প্রতারণা, তোলাবাজি–সহ একাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে। অভিষেকের বিরুদ্ধে কোথাও কোনও ফৌজদারি মামলা নেই। তারপরেও অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও ‘তথ্যপ্রমাণ’ ছাড়াই বিজেপির জনসভা থেকে একাধিকবার অবমাননাকর, মিথ্যে কথা বলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
দলবদলের পর থেকে একাধিক সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে নাম ধরেও বলেছেন। সেই ইস্যুতেও শুভেন্দুকে একহাত নেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘তোমাকে টিভিতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। আর তুমি আমাকে তোলাবাজ বলছ? সুদীপ্ত সেন বলেছিলেন তিনি শুভেন্দুকে টাকা দিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীকে ছ'কোটি টাকা দিয়েছিলেন। ১০ বছর খেয়ে মধু মীরজাফর এখন সাজছে সাধু। সুদীপ্ত সেন আদালতকে চিঠিতে লিখেছিলেন। এমন প্রমাণ আমার বিরুদ্ধে নেই। সুদীপ্ত সেনকে ব্ল্যাকমেল করতেন শুভেন্দু অধিকারী। আমি প্রমাণ দিয়েছি, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারবে? প্রমাণ দিতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। টিভির পর্দায় টাকা নিয়েছ আর ভাইপো তোলাবাজ?’
মমতা–অভিষেককে কেন্দ্র করে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সেই সূত্রেই এবার বিজেপি নেতাদের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কটাক্ষ করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘অমিত শাহের ছেলে বিসিসিআই সচিব, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয় বিধায়ক, মুকুল রায়ের ছেলে বীজপুরের বিধায়ক। এরা বলছে আবার পরিবারতন্ত্রের কথা! আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, আপনি সংসদে আইন আনুন, একটা পরিবার থেকে একজনই রাজনীতি করতে পারবেন। আমি সেই আইনে প্রথম ভোট দেব। আর বিজেপি নেতারা আজ বলুন, আপনাদের পরিবারের একজনই রাজনীতি করবে। আমি কাল রাজনীতি থেকে সরে যাব, একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করবেন। চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা আছে বিজেপি নেতাদের?’