ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এমনই অভিযোগ করলেন সদ্য বিজেপি–তে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু। ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হলদিয়ায় এক সরকারি অনুষ্ঠানে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দিব্যেন্দুকে। তাঁর অভিযোগ, আমন্ত্রণ গ্রহণ করার পর থেকেই তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলছিলেন, ‘হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গেলে আমার হাত–পা ভেঙে দেবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে ফোনে। যদিও এ ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। আমি ওই অনুষ্ঠানে যাবই। এটা একটা সরকারি অনুষ্ঠান। স্থানীয় সাংসদ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও আমাকে অনুষ্ঠানে আসতে বলেছেন।’
দিব্যেন্দুর দাদা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী গত ১৯ ডিসেম্বর বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন। তাঁর আর এক ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তার পর থেকে দিব্যেন্দু এবং তাঁর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী— দু’জনেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে সভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাতেও গরহাজির ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু।
মমতার ওই সভার ব্যাপারে দিব্যেন্দু বলেন, ‘আমি ওই সভায় কোনওরকম আমন্ত্রণ পাইনি। তা ছাড়া আমি সেদিন নানা কাজে ব্যস্তও ছিলাম। এমনকী আমাকে এ নিয়েও হুমকি দেওয়া হয় যে যদি আমি মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাই তা হলে আমাকে মারধর করা হবে।’ যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলদিয়ায় আসার পর রবিবার (৩১ জানুয়ারি) এক হোটেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন দিব্যেন্দু অধিকারী।
এদিকে, তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। যদিও জল্পনা, চলতি মাসের শেষের দিকেই তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছেন তিনি। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন তিনি তাঁর পরিবারেও পদ্ম ফুল ফোটাবেন। দল ছাড়বেন কিনা জানতে চাইলে দিব্যেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন তিনি। এবং দল ছাড়ার হলে তিনি জনগণকে জানিয়েই সেই পদক্ষেপ করবেন।
যদিও হুমকি দেওয়ার কোনও ঘটনার সঙ্গে দল জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, ছেলেখেলা করছে তৃণমূল। অধিকারী পরিবারের বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান মুখ তৃণমূল নেতা অখিল গিরি বলেন, ‘কেন আমরা তাঁকে হুমকি দেব? আমার মনে হয় তিনি (দিব্যেন্দু অধিকারী) প্রচার পেতে এ সব করছেন। এ ধরণের কোনও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়।’
বিজেপি–র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ সব একেবারে শিশুসুলভ ব্যাপার। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে দলে থাকার পরও এক তৃণমূল সাংসদকে এভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল যতদিন ক্ষমতায় থাকবে এ ধরণের ঘটনা ঘটবেই।’