আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠানে তমলুকের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর তিনিও উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। ঠিক তারপরই তমলুক লোকসভা এলাকার তিনটি কলেজের পরিচালন সমিতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তমলুকের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। এই ঘটনায় তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, বহু আগেই ওই তিনটি কলেজের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সাংসদকে সরিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে শিক্ষা দফতরের নির্দেশেই।
ইদানিং অধিকারী পরিবারের সঙ্গে অহিনকুল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। কারণ নির্বাচনের আগে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী ছোটো ভাই সৌমেন্দুকেও বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। বাকি দু’জন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ প্রবীণ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী দলের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছেন। ২০১৬ সালে লোকসভা উপনির্বাচনে জিতে সাংসদ হওয়ার পরেই কাঁথি দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়, তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয় ও নন্দীগ্রাম সীতানন্দ মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি হন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এমনকী দিব্যেন্দুকে মহিষাদল গার্লস কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি মনোনীত করেছিল রাজ্য সরকারই। এখন দিব্যেন্দুকে সরিয়ে তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে পরিচালন কমিটির প্রশাসক করা হয়েছে তমলুকের মহকুমাশাসক প্রণব সাঙ্গুইকে। নন্দীগ্রাম সীতানন্দ মহাবিদ্যালয়ের প্রশাসক হয়েছেন হলদিয়ার মহকুমাশাসক অবনীত পুনিয়া। কাঁথি দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের প্রশাসক করা হয়েছে কাঁথির মহকুমাশাসক আদিত্য বিক্রম মোহন হিরানিকে।
ওই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, ‘অনেক আগেই এই তিনটি কলেজের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। তাই আমায় সরানোর প্রশ্ন নেই।’ উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই অধিকারী পরিবারের প্রতি কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রথমে কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরানো হয় অধিকারী পরিবারের বর্ষীয়ান সাংসদ শিশিরের ছোটো ছেলে সৌম্যেন্দুকে। তারপর ১২ জানুয়ারি দিঘা–শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে। ওই পদে বসানো হয় জেলার রাজনীতিতে অধিকারীদের ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে।
তারপর ১৩ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয় শিশিরবাবুকে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সৌমেন মহাপাত্রকে। এবার কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদ থেকেও শুভেন্দুর সাংসদ ভাইয়ের ডানা ছেঁটে বার্তা দেওয়া হল তাঁকে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাহলে কী এবার দিব্যেন্দু চ্যাপ্টার ক্লোজ করতে চাইছে ঘাসফুল শিবির? উঠছে প্রশ্ন।