প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গালিগালাজ করতে বলা হত। কিন্তু স্রেফ বিরোধিতার খাতিরে সমালোচনার নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে আরও অনেক সমস্যা ছিল। যা ব্যক্তিগতভাবে তাঁর একেবারেই পছন্দের ছিল না। দলত্যাগের পর এমনটাই জানালেন দীনেশ ত্রিবেদী।
তবে দীনেশের নাকি দীর্ঘদিন ধরেই ‘ক্ষোভ’ জমছিল। তারই রেশ ধরে এসেছে ‘অন্তরাত্মার’ ডাক। শুক্রবার রাজ্যসভায় নাটকীয় পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে ছেড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসও। তারপর ‘দ্য হিন্দু'-তে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী জানান, রাজ্যসভার মতো ‘পবিত্র’ জায়গায় বসেও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না। দীনেশের কথায়, ‘আমি ভীষ্ম পিতামহের মতো হতে চাইনি। হিংসা এবং অন্যায়ের সময়ও কোনও শব্দোচ্চারণ না করার জন্য তাঁকে মহাভারতে দোষারোপ করা হয়। দলে দুর্নীতি এবং বাংলার রাস্তায় হিংসার সময় আমি চুপ করে থাকতে পারি না। যখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা চালানো হল, তখন আমি দলের মধ্যে সমালোচনার মধ্যে পড়েছিলাম। কারণ আমি হিংসার পক্ষে দাঁড়ায়নি। প্রতিদিন আমায় বলা হত যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গালিগালাজ করতে বলা হত। কিন্তু সেটা আমার মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না। যদি প্রধানমন্ত্রী ভালো কিছু করেন, অবশ্যই আমাদের তা প্রশংসা করতে হবে। যদি সরকার কিছু ভুল করে, তাহলে অবশ্যই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে এবং সৌজন্যবোধ বজায় রেখে বলিষ্ঠভাবে বিরোধিতা করতে হবে।’
তারইমধ্যে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জোর কানাঘুষো চলছে। সেই বিষয়ে ‘দ্য হিন্দু'-তে দীনেশ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন মোদীর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক আছে। সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসুদের, সংঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট উষ্ণ। তিনি বলেন, ‘আমি সেই ধরনের মানুষ, যিনি মনে করেন না যে বিরোধী দলে থাকলেই তিনি শত্রু। আমি মানুষের মধ্যে থাকব। কিন্তু এখন আত্মসমীক্ষার সময়।’ শনিবার অবশ্য আরও একধাপ এগিয়ে দীনেশ বলেন, ‘আমি বিজেপি এবং দলের শীর্ষনেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমায় জানানো হয়েছে, বিজেপিতে স্বাগত জানানো হবে। সেটা যে সম্মানের হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আমায় কিছুটা ধাতস্থ হতে দিন।’
যদি ‘ধাতস্থ’ বা ‘আত্মসমীক্ষা’-র পর ফল যে কী হতে পারে, সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের। পর্যবেক্ষকদের অভিমত, সরকারিভাবে কোনও দলে যোগ না দিলেও তাঁর বিজেপির সদস্যগ্রহণ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।