তৃণমূলের বিকল্প আরও উন্নততর তৃণমূল— গত বৃহস্পতিবার তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথাই বলেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘তৃণমূলের বিকল্প মা–মাটি–মানুষ। অন্য কেউ নয়। তৃণমূল আরও উন্নততর তৃণমূলের দিকে যাবে।’ কিন্তু কী সেই ‘উন্নততর তৃণমূল’। কটাক্ষের সুরে মঙ্গলবার তারই ব্যাখা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন বিজেপি–র ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা করতে ঝাড়গ্রামের লালগড়ে এসেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। রথযাত্রার সূচনার আগে ওই সভায় শুভেন্দুর বক্তব্যে উঠে আসে ‘উন্নততর তৃণমূল’ প্রসঙ্গ। তাঁর কটাক্ষ, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের মাননীয়া নেত্রী কয়েকটা মিটিংয়ে বলেছেন, উন্নততর তৃণমূল নাকি তিনি দেবেন। উন্নততর তৃণমূল কী?’ শুভেন্দুর জবাব, ‘এর পরে যদি তৃণমূল আসে তা হলে তৃণমূল কংগ্রেস অনলাইনে কাটমানি নেবে। সেটাই হবে উন্নততর তৃণমূল। আর সেই উন্নততর তৃণমূলের মডেল হচ্ছে ভাতিজা ভাইপো।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘দুটো কথা বললে দু’জন রেগে যাচ্ছে। ‘জয় শ্রী রাম’ বললে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেগে যাচ্ছে আর ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বললেই ভাইপো রেগে যাচ্ছে।’ শুভেন্দু এদিন আরও বলেন, ‘২০১১ সালে আমরা সবাই পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছিলাম। কিন্তু আসল পরিবর্তন হয়নি। এখন আমরা আসল পরিবর্তন চাই। নরেন্দ্র মোদীর হাতে বাংলা তুলে দিতে চাই। দিল্লি ও কলকাতায় একই দলের সরকার, ডবল ইঞ্জিন সরকার না হলে বাংলার উন্নয়ন হবে না।’
আদিবাসী সমাজ, বিশেষ করে কুর্মি সমাজকে বঞ্চনা করছে রাজ্যের শাসকদল। এমনই অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। লালগড়ের সভায় এদিন তিনি বলেন, ‘গোটা অর্থবর্ষে সারা দেশ জুড়ে আদিবাসী সমাজের জন্য মোদীজি ৫০০ একলব্য স্কুল তৈরি করবেন। মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টে ওবিসি তালিকাভুক্ত হয়েছিল কুর্মি সমাজ। আর পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান সরকার তাঁদের ওবিসি–বিতে পরিণত করেছে। আর ভোটের আগে ২০ জানুয়ারি কুর্মি সমাজের ভোট হাতানোর জন্য একটা মিথ্যা চিঠি লিখেছে।’
লালগড় তথা জঙ্গলমহলের আদিবাসী সমাজের প্রতি শুভেন্দুর বার্তা, ‘আদিবাসী, কুর্মি সমাজের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করে, ভোটব্যাঙ্কটাকে সুনিশ্চিত করে, চুরির লাইসেন্সটাকে রিনিউয়াল করতে চায় তৃণমূল। তাই দয়া করে আপনারা আপনাদের মধ্যে থাকা ঐক্য ভাঙবেন না। শ্রীরামচন্দ্র তীর–ধনুক ব্যবহার করতেন। আর জঙ্গলমহলের প্রতীক হল তীর–ধনুক। এই জঙ্গলমহলে প্রকৃত রামরাজ্য একমাত্র বিজেপি–ই দিতে পারবে। অন্যে কেউ নয়।’