কলকাতা পুরসভার নির্বাচন কবে হবে, তা এখন ঠিক হয়নি। তার মধ্যে মঙ্গলবার টালিগঞ্জে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল থেকে বাংলার ‘গদ্দারদের’ গুলি মারার স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে সরিয়ে দেওয়া হল কলকাতা পুরসভার ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের যুব সভাপতি সুভাষ সাউকে। আর তা নিয়ে দলের স্থানীয় স্তরে বেশ ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যারা সুভাষ সাউয়ের অনুগামী হিসেবে পরিচিত, তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেননি।
গত সোমবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিজেপির মিছিল থেকে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তার প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার টালিগঞ্জে একটি বড় মিছিলও বের করে তারা। যার নেতৃত্বে ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এই হেভিওয়েট মন্ত্রীদের মিছিল চলার সময় কিছু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী ‘বঙ্গাল কে গদ্দারো কো গোলি মারো…’ বলে স্লোগান ওঠে। তাতে অস্বস্তিতে পড়ে যান মিছিলে থাকা মন্ত্রীরা। এমনকী সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। বিজেপি–সহ অন্য বিরোধী দলগুলি এই ঘটনায় ফায়দা নিতে শুরু করেছিল।
উল্লেখ্য, বুধবার হুগলির চন্দননগরে আয়োজিত বিজেপি নেতা শুভেন্দু আধিকারীর রোড–শো থেকেও ‘গোলি মারো’ স্লোগান দেয়। তার জেরে গ্রেফতার করা হয় যুব মোর্চার যুব সভাপতি সুরেশ সাউ, স্বাস্থ্য সেলের আহ্বায়ক রবীন ঘোষ ও ব্যান্ডেল যুব মোর্চার মণ্ডল সভাপতি প্রভাত গুপ্তাকে। বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতে তোলা হলে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। তখন বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠে তৃণমূলের মিছিল থেকে একই স্লোগান তোলা হলেও কেন সুভাষ সাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? এই নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখনই ডানা ছাঁটা হল সুভাষ সাউয়ের। তিনি ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের যুব সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে শোরগোল চরমে উঠেছে।
এই ঘটনার কথা সামনে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, যাঁরা ওই স্লোগান দিয়েছিলেন, তাঁরা সবাই মিছিলের পিছনের দিকে ছিলেন। তাই নেতাদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তবে এই ধরনের ঘটনাকে কখনও প্রশ্রয় দেয় না তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশেষে বিতর্কের মধ্যে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করল তারা।