ভোট তৃতীয়ায় রাজ্যে একাধিক রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। আর তার জেরে আক্রান্ত বিজেপি– তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা বলে অভিযোগ। আর মঙ্গলবার বীরভূমের দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফকিরবেড়া গ্রামে দেখা দিল তুমুল উত্তেজনা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। অ্যাম্বুলেন্স আটকে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। ফকিরবেড়া গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে পতিহার ডোম নামে ৩৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। মৃত ওই ব্যক্তি এলাকার বিজেপি কর্মী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ওই কর্মীর মৃতদেহ সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাকি বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। এমনকী স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ওই এলাকায় একটি বিজেপির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠক শেষ করে পতিহার ডোম নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু রাতের খাবার খাওয়ার পর তার কাছে একটি ফোন আসে এবং সেই ফোন পেয়ে তিনি বাইরে যান। তারপর আর তিনি বাড়ি ফেরেননি। সকালে তার মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায় ওই পুকুরের পাড়ে। মুখে ও গলায় আঘাত এবং রক্তের চিহ্ন রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতারা।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, এলাকায় বিজেপির সংগঠন বাড়তে থাকায় তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপিকে দুর্বল করার জন্য। পাশাপাশি এই এলাকায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ঘটনার পর মৃত ওই বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে পুলিশ কাউকে না জানিয়েই নিয়ে গিয়েছে। কেন এমনটা করা হলো? উঠছে প্রশ্ন। তাদের আরও অভিযোগ, এলাকার বিজেপি বুথ সভাপতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
দুবরাজপুর ব্লক লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফকিরবেড়া গ্রামে পতিহার ডোমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পরিস্থিতি হাতের নাগালে যেতে থাকলে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অ্যাডিশনাল এসপি–সহ বিশাল পুলিশবাহিনী এবং র্যাফ। এরপরেই পরিস্থিতি আরও ভয়ানক রূপ নেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। তারপর এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের তরফ থেকে লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস চালানো হয়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। ফায়ারিং করা হয় বলেও অভিযোগ বিজেপির। এক বিজেপি কর্মীর গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে।