এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস৷ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে গিয়ে অভিযোগ জানায় তৃণমূল কংগ্রেসের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল৷ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না কমিশনকে৷ বাকি দফার ভোটগুলিতে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারিরও দাবি জানিয়েছে বাংলার শাসকদল৷
দিল্লিতে কমিশনের সদর দফতরে যান চার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, শান্তনু সেন এবং প্রতিমা মণ্ডল৷ তৃণমূল কংগ্রেস যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর দুটি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের উল্লেখ করে বিধিভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে৷ অভিযোগ, গত ১২ এপ্রিল কল্যাণীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘দিদি মতুয়া সমাজের জন্যও কিছু করেননি, নমঃশূদ্র ভাইবোনেদের জন্যও কিছু করেননি৷’ তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এই মন্তব্য করে আসলে ধর্ম এবং জাতপাতের বিভেদ করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিতীয় অভিযোগ, গত ১০ এপ্রিল শিলিগুড়ির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী কোচবিহারের শীতলকুচির ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন৷ ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপির প্রতি জনসমর্থন দেখে দিদি এবং তার গুন্ডারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে৷’ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যও আদর্শ আচরণবিধির পরিপন্থী বলে অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ গত ১১ এপ্রিল শান্তিপুরের সভায় অমিত শাহ অভিযোগ করেন, ‘কোচবিহারে মৃত আনন্দ বর্মণের মৃত্যুতে সমবেদনা জানাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ তিনি রাজবংশী সমাজের এক যুবক৷’ তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, আনন্দ বর্মণের মৃত্যুর খবর পেয়েই সমবেদনা জানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী৷ অমিত শাহ এই মন্তব্য করে ভেদাভেদের রাজনীতি করার চেষ্টা করেছেন৷
এই ধরনের উক্তি এবং মন্তব্য করার জন্য বাকি দফার ভোটগুলিতে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এদিনও ফের তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, বিজেপির মাঝারি এবং নিচুস্তরের বেশকিছু নেতা এমন কিছু সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করছেন, যা আদর্শ আচরবিধির বিরুদ্ধে৷ আবার শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন একাধিক বিজেপি নেতা৷ কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কমিশন যথেষ্ট পদক্ষেপ করেনি।