চতুর্থ দফার ভোটে ফোকাস পয়েন্ট হয়ে উঠেছে শীতলকুচি। কারণ সেখানে একসঙ্গে পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। আর অভিযোগের আঙুল উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে। কোচবিহারের শীতলকুচিতে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। যদিও নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে তা খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে বিজেপি নেতার বক্তব্যও এক। বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেছেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি গুলি চালিয়ে থাকে, তা আত্মরক্ষার্থেই চালিয়েছে। আসলে তৃণমূল কংগ্রেস জানে, ওরা হারছে।’
এই ঘটনায় সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর ভার যাদের হাতে, তাদের গুলিতেই ভোটারদের মৃত্যুর তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএম, কংগ্রেস–সহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল। তার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে বিবেক জানান, শীতলকুচির জোড়পাটকির যে ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। তাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছিল। দু’পক্ষের সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করলে পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু গ্রামের মানুষ তাদের ঘিরে ধরেন। আর আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাই আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কিন্তু বিজেপি নেতার সঙ্গে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকের বক্তব্য এক হয়ে যাওয়ায় নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
এদিকে বিবেক দুবে’র এই যুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিবেকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন তিনি। তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘গুলি চালিয়ে মানুষগুলিকে মেরে ফেলে এখন আত্মরক্ষা বলে চালানো হচ্ছে।’ অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথটি বিজেপি দখল করে নেওয়ার পরে পাঁচ ব্যক্তি গুলিতে নিহত হয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন কমিশনের উদ্দেশ্যে চিঠিতে লিখেছেন, ‘দলীয় সূত্রে আমরা জেনেছি, নিহত পাঁচজনই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিষয়টির তদন্ত এবং যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতারির পদক্ষেপ শুরু করা উচিত।’