তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নিজেদের দলে নিয়ে মুখ পুড়েছে বিজেপির। আর তাঁরা পেয়েছেন দলবদলু তকমা। যাঁরা ভেবেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপদে ফেলে ক্ষমতায় আসবেন আজ তাঁরাই বিপদে পড়েছেন। কারণ তাঁরা দলবদলেও জিততে পারেননি। আবার বিজেপি ক্ষমতায় আসেনি। তাই বিরোধী আসনে বসে লড়াই করাটা কঠিন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ নেমে এসেছে বিজেপি নেতা, কর্মী থেকে জয়ী–পরাজিত প্রার্থীদের উপর। যার জন্য রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন দিলীপ ঘোষ–মুকুল রায়। আজ সন্ধ্যেবেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। সেখানে বিষয়টি উত্থাপন করবেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে এই দলবদলুরা আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরত আসতে পারেন। অন্তত চেষ্টা করবেন। সূত্রের খবর, সেই চেষ্টা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তৃতীয়বার মন্ত্রীসভা গঠন করতে চলেছেন আগামী ৫ মে। তাই সোমবার কালীঘাটের বাড়ির সাংবাদিক বৈঠক থেকে দলবদলুদের জন্য বিশেষ বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেউ ফিরে আসতে চাইলে আসতেই পারেন।’ সুতরাং ফেরত আসতে আর বাধা নেই সেই বার্তাই দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন একদল তৃণমূলী। এঁদের মধ্যে কেউ ছিলেন বিধায়ক, কেউ মন্ত্রী কেউ বা গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সবারই মূলত দাবি ও অভিযোগ ছিল ‘দম বন্ধ হয়ে আসছে। দলে কাজ করতে পারছিলাম না।’ কিন্তু ভোটবাক্সে লাভের মুখ দেখতে পারেননি বহু দলবদলু। এমন নেতা–নেত্রীদের তালিকা সংক্ষিপ্ত হলেও তাঁরা হেভিওয়েট। সব্যসাচী দত্ত, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশাখী ডালমিয়া বা প্রবীর ঘোষালের মতো সেই হেভিওয়েটদের পক্ষেই আম জনতার রায় পড়েনি। এমনকী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা রুদ্রনীলও। তাই বেগতিক দেখে তাঁরা আবার ফিরে আসতে চান বলে সূত্রের খবর।
তবে দেখা গিয়েছিল, এই নেতা–নেত্রীদের জেতাতে প্রচারে দেখা গিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি থেকে স্বয়ং অমিত শাহকে। ভোটপ্রচারে বাংলায় পা রেখেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ–সহ কেন্দ্রীয় নেতা–মন্ত্রীরা। কিন্তু এই দলবদলুদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আম জনতা। এখন প্রশ্ন উঠছে, এবার কী তাহলে নেত্রীর পরোক্ষ আহ্বানে গুটি গুটি পায়ে ঘরে ফিরবেন দলবদলুরা? সময় উত্তর দেবে।