আগেই এড়িয়ে গিয়েছিলেন ভোটের প্রশিক্ষণ শিবির। এবার ভোটের ডিউটিতে যেতে আপত্তি করায় কমিশনের কোপের মুখে পড়তে হল ১৩ জন ভোটকর্মীকে। মোট ১৩ জন ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল নির্বাচন কমিশন। তাঁদের মধ্য যেমন রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়—কলেজের অধ্যাপকেরা তেমনই রয়েছেন স্কুল শিক্ষক—ইঞ্জিনিয়ারও। আগে কখনও এমন ঘটনা এরাজ্যে ঘটেছে কি না—তা মনে করতে পারছেন না ভোটের কাজে নিযুক্তরা। ভোটের মরশুমে যা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, ভোটে অশান্তির আশঙ্কা করে অনেকেই ডিউটি এড়ানোর চেষ্টা করেন। এই ১৩ জন শিক্ষক ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি পেতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন। যদিও তারা নিয়মিত ক্লাস করাচ্ছিলেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলাশাসক অলঙ্কৃতা পাণ্ডে বলেন, ‘শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার—সহ ১৩ জন ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।’
বুধবার উত্তর দিনাজপুর জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন পর্বে ভোটের প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনের আগেই। যেসব ভোট কর্মীরা সময়মত প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত হতে পারেননি, পরে কমিশনের তরফে তাঁদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও দেখা গিয়েছে, একাধিক ভোটকর্মী প্রশিক্ষণের বিশেষ শিবিরগুলোতেও অনুপস্থিত থেকেছেন। এমনকী, নোটিস পাঠানোর সত্ত্বেও কোন উত্তর না মেলায়, প্রথমে তাঁদের শোকজ করা হয়। কিন্তু শোকজের যে জবাব তাঁরা দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। সেকারণেই ভোটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকা মোট ১৩ জন ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অফ দ্য পিপল অ্যাক্ট ১৯৫১’—সহ তিনটি ধারায় রায়গঞ্জ থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
কি রয়েছে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অফ দ্য পিপল অ্যাক্ট ১৯৫১’—এ ? ভারতীয় সংবিধানের ৩২৭ নিবন্ধের এই আইনের একটি অংশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত যে কোনও সিদ্ধান্ত, সন্দেহ অথবা বিরোধের কারণে হওয়া অপরাধের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
নির্বাচন কমিশনের তরফে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও কালিয়াগঞ্জ কলেজের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর-সহ জেলার বিভিন্ন স্কুলের ১০ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি একই অভিযোগ করা হয়েছে এক ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধেও।
চলতি নির্বাচনে জেলার ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ৩ হাজার ৭৬টি বুথ তৈরি হয়েছে। এইসব ভোট কেন্দ্রের ভোট নেওয়ার জন্য প্রায় ১৫ হাজারের বেশি ভোট কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ২৫ শতাংশ ভোটকর্মীকে অতিরিক্ত রাখা হয়েছে।