দু’দফার নির্বাচনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়েছে নন্দীগ্রামে। এবার সেখানে একাধিক বুথে এজেন্ট দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। একশোর বেশি বুথে তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে তাঁদের বসতে দেওয়া হয়নি। তৃতীয় দফার নির্বাচনের আগে তাই সতর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওরা ভয় দেখায় দলের কর্মীদের। ভোটের দিন এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। পুলিশ দিয়ে ভয় দেখানো হবে। তাই ভয় পেলে চলবে না বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যারা দুর্বল, ভয় পাচ্ছেন তাঁদের এজেন্ট হিসাবে বসার দরকার নেই। প্রয়োজনে বাড়ির মহিলাদের এজেন্ট হিসাবে বসিয়ে দাও। প্রয়োজন পড়লে একেবারে হাতা, খুন্তি নিয়ে চলে আসবে তাঁরা।’
এরপরই তাঁর অভিযোগ, নন্দীগ্রামে ওরা অনেক অত্যাচার করেছে। নির্বাচনী সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘যদি কোনও এজেন্ট দূর্বল হন, তাহলে তাঁকে বলে দিন, তাঁর এজেন্ট হওয়ার দরকার নেই। নন্দীগ্রামে মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে। কাপুরুষদের এজেন্ট করার দরকার নেই। তেমন দরকার হলে মেয়েদের এজেন্ট করে দিন। পুলিশ অত্যাচার করলে ভিডিও তুলে ভাইরাল করে দিন। নন্দীগ্রামে অনেক অত্যাচার করেছে পুলিশ। তাই আমি বসেছিলাম। এতটাই ভয়ের পরিবেশ ওরা তৈরি করে দিয়েছিল যে, মানুষ ভয়ে ভোট দিতে আসতেই চাইনি।’
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘দাঙ্গা করলে আমাদের পাঙ্গা নিতে হবে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে পুলিশ নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করবে ওরা। কিন্তু তাতে যেন কেউ ভয় না পায়। আমাকে মেরে ফেললেও আমি ভোট দেব, আপনাদেরও দিতে হবে। দরকার পড়লে, মেয়েদের এজেন্ট করে দিন। মেয়েরা জোট বাঁধলে কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। বেশি চিন্তা করবেন না। আমাদের সরকার আসছে।’
উল্লেখ্য, রাত পোহালেই তৃতীয় দফার নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘মরে যাব কিন্তু বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করব না। আমার মতো জেদি লোক খুব কম আছে। আমি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়াই করি। খেলা হবে, খেলাতে জিততেও হবে। আগামী ১০ এপ্রিল জোড়াফুলে ভোট দিতে হবে। আমি একা আর আমার সঙ্গে লড়ছে লক্ষ বিজেপি নেতা। সব বন্ধ করে দিচ্ছে বিজেপি। কৃষকদের তালিকা দেওয়া আছে অথচ টাকা দেয়নি বিজেপি।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন্নগরের সভা থেকে জানান, এবার ভাল হয়েছে গদ্দাররা দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। নইলে ভোটের পর বিজেপি তাঁদের কিনত। যাতে বিজেপি টাকা দিয়ে কিনতে না পারে তাই এবার বেছে বেছে প্রার্থী করা হয়েছে। নন্দীগ্রাম দেখে আমার চোখ খুলে গিয়েছে। নির্বাচনের পরে কেউ যাতে চলে না যায় সেই জায়গা থেকে সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব।