চতুর্থ দফার প্রচারের শেষ ঘণ্টা। বজবজে রোড-শো করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের একটি বিধানসভা আসনেও পদ্মফুল ফুটতে দেবেন না। শেষপর্যন্ত শুধু নিজের কেন্দ্র নয়, পুরো দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি আসনেও পদ্মফুল ফুটতে দিলেন না।
অথচ ‘ভাইপো’ অস্ত্রে বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। সেই স্বপ্ন তো অধরা থাকলই। সেইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস দুর্গ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গেরুয়া শিবিরকে দাঁতও ফোটাতে দিলেন না ‘ভাইপো’ তথা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তৃণমূলের পক্ষে ৩১-০ হল না বটে, তবে ৩০ টি আসনে জিতল তৃণমূল।
গত লোকসভা ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব আসনেই জিতেছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু ২৪ মাসের ব্যবধানে তৃণমূলের দুর্গ ভেদ করার একাধিক সুযোগ পেয়েছিল বিজেপি। তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে আমফানের ত্রাণবণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ, চাল চুরির অভিযোগ নিয়ে লাগাতার প্রচার চালিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি অভিষেককে জুড়ে দিয়েছিলেন। খোদ নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জে পি নড্ডারা যখনই জনসভা করেছেন, তখনই তাঁদের মুখে শোনা গিয়েছে অভিসেরেপ নাম। সঙ্গে ছিল ধর্মীয় মেরুকরণ, জাতপাতের তাস, ভোট কাটাকুটির অঙ্ক। কিন্তু রবিবার ফলপ্রকাশের পর স্পষ্ট হয়ে যায়, বিজেপির কোনও কৌশলই কাজে দেয়নি। বরং যে ‘ভাইপো’-র বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছিল বিজেপি, সেই ‘ভাইপো’-ই দাপটের সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩০ টি আসন জিতে বেরিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, জেলায় ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের থেকে একটি বেশি আসনও জিতেছে তৃণমূল। একমাত্র ভাঙড় আসনে তৃণমূলের ঝাণ্ডা ওড়েনি। তা গিয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) দখলে।
অভিষেকের সেই পারফরম্যান্সে আপ্লুতও হয়েছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। যে অভিষেক রাজ্যজুড়েই প্রচার চালিয়েছিলেন। মমতা জানিয়েছেন, এবারের জয়ের অনেকটাই কৃতিত্ব প্রাপ্য অভিষেকের। যাবতীয় পরিকল্পনা করে ভোটের পরিচালনা করেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।