ঘনঘন আসছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। ময়দানে ঝাঁপিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সর্বস্তরের নেতারাও। ‘পরিবর্তন যাত্রা’-র রথ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরছে গেরুয়া শিবির। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আবার কলকাতা জোনের রথ ছুটতে শুরু করবে। তারইমধ্যে দেখা মিলছে না কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী তথা কলকাতা জোনের সহ-আহ্বায়ক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রথযাত্রার মরশুমে কোথায় গেলেন শোভন-বৈশাখী? তাহলে কি বসন্তে তাঁদের আবার ‘গোঁসা’ হল?
এমনিতেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শোভনের কাজে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। ঢাকঢোল পিটিয়ে যে কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি, তাতে শেষমুহূর্তে আসেননি। তা নিয়ে দলের একটি মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়। ফলে রাজ্য বিজেপির একাংশই তাঁকে কার্যত এড়িয়ে যেতে থাকেন। সেইসব পর্ব কাটিয়ে অনেকদিন পর পথে নামেন শোভন। সাংগঠনিকভাবে বিজেপির সবথেকে ‘দুর্বল’ কলকাতা জোনে টানা কয়েকদিন একাধিক সভা, রোড শো করেন। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখীও। তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন। তারইমধ্যে শক্তঘাঁটিতে তৃণমূলকে ধাক্কা দিতে কলকাতা জোনের রথযাত্রার প্রস্তুতি সারতে থাকে বিজেপি। রথযাত্রা নিয়ে বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন শোভন-বৈশাখীও। কিন্তু সেই রথযাত্রা শুরুর ঠিক আগে তাঁদের খোঁজ মিলছে না। গত ৯ ফেব্রুয়ারি শেষবার তাঁদের একটি কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উত্তর মেলেনি।
শোভন-বৈশাখী ঘনিষ্ঠ নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, ব্যক্তিগত কাজে কলকাতার বাইরে আছেন তাঁরা। কোথায় আছেন বা কবে ফিরবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। বিজেপির তরফে অবশ্য শোভন-বৈশাখীর অনুপস্থিতি নিয়ে মুখ খোলা হয়নি। তবে রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষস্তরের নেতা আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন, এমনিতেই নিজেদের মর্জি মতো কর্মসূচিতে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। ভ্যালেন্টাইস-পর্ব চলছিল বলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়নি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তাঁদের ছাড়াই কলকাতা জোনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’ করতে পারবে বিজেপি।
তার জেরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যে শোভনের হাত ধরে কলকাতা জোনে দাঁত ফোটানোর চেষ্টা করছিল বিজেপি, তা কি এখন বিশ বাঁও জলে? উলটে শোভন-বৈশাখীর জন্য বারবার অস্বস্তিতে পড়ে কি ছুঁচো গেলার অবস্থা বিজেপির?