রোজ পালা করে রাজ্যে আসছেন মোদী–শাহ–নড্ডারা। সঙ্গে চলছে নন্দীগ্রামের প্রার্থী ‘মমতা হারছেন’—এহেন ‘গোয়েবলসীয়’ প্রচার। একই মিথ্যার বারবার উপস্থাপন গত কয়েকদিন ধরে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার এই ‘অপচেষ্টা’ ছাড়া আর কিছুই নয়। আসলে নেপথ্যে রয়েছে সম্পূর্ণ অন্য কারণ। যার ব্যাখ্যা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি যশবন্ত সিনহা। বাংলার প্রথম দু’দফার নির্বাচনের পরেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়েছেন তিনি।
তাই তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। শনিবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি যশবন্ত সিনহা। যশবন্তের দাবি অনুযায়ী, শুক্রবার গভীর রাতে বাংলা ভোটে পদ্ম বিপর্যয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনাও সেরেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা। এদিন তিনি বলেন, ‘আজ সকালেই দিল্লি থেকে আমি বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, গতকাল গভীর রাতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পার্টির সভাপতি নড্ডজির একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে যে সমস্ত রাজ্যে ভোট হচ্ছে, তার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলার ভোট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এটি একটি দলীয় অভ্যন্তরীণ বৈঠক তাই সবরকম মত বিনিময় হয়েছে। বিজেপির এই ত্রয়ী একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তা হল— যে দু’দফায় ভোট হয়েছে, তাতে তাঁদের পারফর্ম্যান্স হতাশাজনক হবে। তাই বাকি যে ৬ দফা ভোট রয়েছে, তাতে যে তাঁদের পারফর্ম্যান্স আরও খারাপ হবে, তা তাঁরা বুঝেছেন। তাঁদের আশার বড় জায়গা ছিল প্রথম ২ দফাই।’
এই পরিস্থিতিতে মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে বলেও জানান য়শবন্ত। বাকি যে ৬টি পর্যায় রয়েছে সেখানে ফল আরও খারাপ হতে পারে। তাই মাইন্ডগেমেই ভরসা রাখছে বিজেপি। মিথ্যে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হবে। এখনও বাকি ছয় দফার লড়াই। এর মধ্যেই বিজেপি বলতে শুরু করেছে তারা ম্যাচ পকেটে শুরু করে নিয়েছে। তৃণমূল নেত্রী নিজেও বলছেন খুবই ভালো হয়েছে প্রথম দুটি দফার ভোটের ফল। কিন্তু রণাঙ্গনে তিনি একা, তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন বিজেপির বহু ডাকসাইটে নেতা। তাঁদের মূল লক্ষ্য ভোটের ফল যাইহোক না কেন, আপাতত ধারণা তৈরি করে হাওয়া যতটা সম্ভব অনুকূলে আনা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই বিষয়ে যশবন্ত সিনহা বলেন, ‘নন্দীগ্রামে ভোট হয়ে গিয়েছে, সেখানে মমতা বিপুল ভোটে জিতবেন। তাই তাঁর আর কোথাও দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় ঝুট পার্টি এই গুজব ছড়াচ্ছে। অসমে কী হয়েছে, তা আমরা দেখেছি। রহস্যের কথা এই যে, যেখানে যেখানে বিজেপির মনে হচ্ছে যে তাঁরা ভোটে হেরে যাবেন, সেখানে সেখানেই তাঁরা ইভিএম বদলে দিচ্ছে।’