এমনিতেই বিধানসভা ভোটের আগে ‘বাংলার সংস্কৃতি’ নিয়ে তরজা ক্রমশ বাড়ছে। তারইমধ্যে বেফাঁস মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়ালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একটি আলোচনচক্রে তিনি বলেন, ‘রামের ১৪ জন পূর্বপুরুষের নামও পেয়ে যাবেন আপনি। দুর্গার পাওয়া যাবে কি?’ সেই মন্তব্যের পরই আসরে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, দেবী দুর্গার অপমান করেছেন দিলীপ।
বঙ্গে বিধানসভা ভোটের আবহে শুক্রবার একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। সেখানে ডাক পড়েছিল দিলীপের। সেই আলোচনাচক্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার সময় দিলীপ বলেন, 'খুব দুর্ভাগ্যের কথা। (তৃণমূল) এমন একটি দল যে দলের কোনও মাথামুণ্ডু নেই। দলের কোনও আদর্শ নেই। এমন দল যে ধর্মের জায়গায় গিয়ে রাজনীতির কথা বলে। রাজনীতির জায়গায় ধর্ম-জাতপাত নিয়ে কথাবার্তা বলে। আমরা সেরকম করি না। আমরা একেবারে খোলাখুলি রাজনীতি করি। ভগবান রাম রাজা ছিলেন। কেউ তাঁকে অবতার বলে বিশ্বাস করেন। তাঁর ১৪ জন পূর্বপুরুষের নামও পেয়ে যাবেন আপনি। দুর্গার পাওয়া যাবে কি? তাই রাজা, সুশাসক, মর্যাদা পুরুষোত্তম মনে করা হয়।' সঙ্গে বলেন, ‘দুর্গা জানি না কোথা থেকে এসে যায়।'
দিলীপের সঙ্গে সেই আলোচনাচক্রে হাজির ছিলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও। সেই মন্তব্যের জন্য দিলীপ এবং বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। দাবি করেন, বহু ভাবনা নিয়ে গড়ে উঠেছে ভারত। বিভিন্ন রাজ্যকে রামের আরাধনা করা হলেও বাংলায় দেবী দুর্গাকে রক্ষক হিসেবে দেখা হয়। বাংলায় দেবী দুর্গার পুজো করা হয়। দেবী দুর্গা তো হিন্দুত্বেরও ভাবনা, শুধু বাংলার ভাবনা নয়। গেরুয়া শিবির দেশের ইতিহাস পালটে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন কাকলি।
সাংসদের পাশাপাশি দিলীপের মন্তব্য নিয়ে টুইটারে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের তরফে একটি টুইটবার্তায় বলা হয়, 'অভাবনীয়! বাংলার পবিত্র মাটিতে বসে দিলীপ ঘোষবাবু আমাদের দেবী দুর্গাকে অপমান করেছেন! দেবী দুর্গা আমাদের মা, আমাদের শক্তি, আমাদের অনুপ্রেরণা! যাঁরা নিজেদের হিন্দু ধর্মের রক্ষক ও সমর্থক বলে দাবি করেন, তাঁরাই এখন দেবী দুর্গার অবমাননা করছেন।' ঘাসফুল শিবিরের দাবি, দেবী দুর্গাকে যেভাবে অপমান করেছেন, তা একেবারেই মেনে নেবেন না মহিলারা। আগামিদিনে ভোটের বাক্সে বিজেপি যোগ্য জবাব পাবে বলেও জানানো হয়েছে।