সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তাঁর জীবনে একটা অপূরণীয় ক্ষতি,মুম্বইয়ে একদম শুরুর দিন থেকে সুশান্তের সঙ্গে বন্ধুত্ব সন্দীপ সিংয়ের। সুশান্ত-অঙ্কিতার কমন ফ্রেন্ড সন্দীপ। একসঙ্গে অনেক স্মৃতি,অনেক মুহূর্ত জড়িয়ে রয়েছে। সুশান্তের শেষযাত্রায় অঙ্কিতা না থাকলেও এক মূহূর্ত বন্ধুকে কাছ ছাড়া করেননি সন্দীপ। বাড়ি থেকে কুপার হাসপাতাল, সেখান থেকে ভিলে পার্লের পবন হংস মহাশ্মশান সর্বত্রই সুশান্তের নিরথ দেহটা আগলে রেখেছিলেন সন্দীপ। বন্ধু যে এভাবে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি প্রযোজক সন্দীপ সিং। এবার সুশান্ত নয় অঙ্কিতার জন্য খোলা চিঠি লিখলেন সন্দীপ।হৃদয় নিংড়ানো এই পোস্টে সন্দীপ লেখেন, তার বিশ্বাস একমাত্র অঙ্কিতাই পারত সুশান্তকে বাঁচাতে কিন্তু আপসোস…

প্রিয়, অঙ্কিতা,
প্রত্যেকটা দিন যাচ্ছে, আর এই ভাবনাটা আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে বারবার.. যদি..যদি… আমরা আর একটু চেষ্টা করতাম,যদি আমরা ওকে আটকাতে পারতম, আমরা ওর কাছে ভিক্ষা চাইতাম!
আমি জানি আজ তোরা আলাদা,কিন্তু তুই শুধুমাত্র ওর খুশি আর সাফল্য চেয়েছিস..তোদের ভালোবাসাটা পবিত্র ছিল। ওটা আলাদাই কিছু একটা ছিল। তুই আজও তোর বাড়ির বাইরের ওই নেমপ্লেট থেকে সুশান্তের নামটা সরাসনি। আমি খুব মিস করি রে ওই দিনগুলো,যখন আমরা একসঙ্গে থাকতাম লোখান্ডওয়ালায়,একটা পরিবারের মতো। আমরা কত মুহূর্ত একসঙ্গে কাটিয়েছি বল,সেগুলো ভেবেই চোখে জল চলে আসছে,মনটা আজ বড্ড কাঁদছে…একসঙ্গে রান্না করা,একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া, এসি দিয়ে টপ টপ করে জল পড়া, মনে আছে আমাদের স্পেশ্যাল মটন ভাত, আমাদের লং ড্রাইভ-উত্তন,লোনাভালা কিংবা গোয়া! আমাদের পাগলামিতে ভরা হোলি! সেই হাসি গুলো যা আমরা ভাগ করে নিয়েছে,সেই সংবেদনশীল মুহূর্তগুলো,জীবনের খারাপ সময়গুলো যখন আমরা একে অপরের পাশে ছিলাম। তুই সবচেয়ে বেশি ছিলিস। ওর মুখে এক ঝলক হাসি ফোটাতে তুই কী না করতিস বল!'
আজও আমি বিশ্বাস করি তোরা মেড ফর ইচ আদার। তোদের ভালোবাসাটার মধ্যে দেখনদারি ছিল না। সেই ভাবনা,সেই স্মৃতি আমরা মনটা ভেঙে দিচ্ছে..কী করে ফিরে পাব বল সেগুলো? আমি সেগুলো সত্যি ফেরত চাই! আমি আমাদের তিনজনকে ফেরত চাই! মনে আছে ওই মালপোয়ার কথাটা? কেমন ছোট বাচ্চার মতো আমার মায়ের কাছে ও মটন কারি চাইছিল!
আমি জানি একমাত্র তুই পারতিস ওকে বাঁচাতে,যদি তোদের বিয়েটা হত..যেমনটা আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম। তুই পারতিস ওকে বাঁচাতে,যদি ও তোকে থাকতে দিত…তুই শুধু ওর গার্লফ্রেন্ড নয়,ওর স্ত্রী,মা, বেস্ট ফ্রেন্ড-সব ভূমিকা পালন করেছিল। আমি সত্যি তোকে ভালোবাসি অঙ্কিতা। আমি আশা রাখছি আমাদের এই বন্ধুত্বটা হারিয়ে যাবে না। ওটা আমি নিতে পারব না'।

নবভারত টাইমসের রিপোর্ট বলছে,সুশান্ত সিং রাজপুতের মনোবিদ কেশরি চভদার পুলিশকে দেওয়া বয়ানে প্রয়াত অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন,ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের শিকার ছিলেন সুশান্ত,রাতে তিনি ঘুমতে পারতেন না। অদ্ভূত চিন্তাভাবনা তাঁর মাথায় ঘর করত। অঙ্কিতা লোখান্ডের সঙ্গে ব্রেক আপের পর (২০১৬) বেশ কিছু সম্পর্কে জড়িয়েছেন সুশান্ত, তবে প্রতিবারই তিনি অনুভব করেছেন অঙ্কিতার মতো করে তাঁকে কেউ ভালোবাসেনি! চিকিত্সক নাকি বলেছেন রাবতা কো-স্টার কৃতী শ্যানন এবং এক পরিচালকের মেয়ের সঙ্গে প্রেম সম্পর্ক ছিল সুশান্তের,কিন্তু দুটো সম্পর্কই টেকেনি।এখানেই শেষ নয়,বর্তমান গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গেও খুশি ছিলেন না সুশান্ত। মনোবিদ আরও জানান সুশান্ত বাইপোলার মনের অধিকারি ছিলেন।