হাড়হিম করে দেওয়ার মতো এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এক ২৪ বছর বয়সী মডলেকে এক মাস ধরে কোচির এক ফ্ল্যাটে বন্ধ রেখে ধর্ষণ ও যোন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ। ঘটনাটি মাস তিনেক আগেকার। সেই ফ্ল্যাট থেকে কোনওরকমে পালিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় নির্যাতিতা মহিলা, তবে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি- দাবি তাঁর।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে নির্যাতিতার এক বন্ধু চোট-আঘাতে ভরপুর ওই মডেলের বেশ কিছু ছবি সোমবার প্রকাশ করে সুবিচারের দাবি চাইলে। সেই ছবিতে মডেলের শরীরে প্রচুর মারের দাগ, এমনকি পুড়িয়ে দেওয়ার চিহ্ন দেখা গিয়েছে। এরপর সংবাদমাধ্যমের তরফে পুলিশে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক। পুলিশ অভিযুক্তর খোঁজ চালাচ্ছে।
অন্যদিকে আগেভাগেই হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি জানিয়েছে অভিযুক্ত। মঙ্গলবার আদালতের তরফে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মামলার সঙ্গে জড়িত সব তথ্য শুক্রবারের মধ্যে আদালতে জমা দিতে। এরপরই পুলিশের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়, কোচির পুলিশ কমিশনার সি নাগরাজু জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উত্তর কেরালার বাসিন্দা ওই মডেল নিজের অভিযোগের কপিতে জানিয়েছেন ২২ দিন ধরে তাকে কোচির একটি ফ্ল্যাটে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছিল এবং তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। তিনি আরও বলেন, তাঁকে মূত্রপান করতে বাধ্য করেছিল অভিযুক্ত, এমনকি তাঁর সারা শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়েও দিয়েছে। খাবার আনতে ফ্ল্যাটের বাইরে গেলে কোনওরকমে পালিয়ে যান তিনি। অভিযুক্তর কাছে নির্যাতিতার বেশকিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিয়ো থাকায় পুলিশের কাছে অভিযোগ না- জানানোর ভয় দেখানো হয়েছিল তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তর সঙ্গে নাকি লিভ টুগেদার করতেন এই মডেল। এবং ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয়। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, অবৈধভাগে আটকসহ নানান ধারায় এফআইআর রুজু হয়েছে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে।
রাজ্যের মহিলা কমিশা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই মামলা নিজেদের নজরদারিতে নিয়েছে। পুলিশকে অবিলম্বে গোটা ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করতে বলা হয়েছে। নির্যাতিতাকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। নির্যাতিতার দাবি, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে।