আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে আজকের দিনেই জন্ম হয়েছিল বলিউডের অন্যতম নামী প্রযোজনা সংস্থা যশ রাজ ফিল্মসের। ১৯৭০ সালের ২৭ সেপ্টম্বর পথচলা শুরু করে ওয়াইআরএফ। যশ চোপড়ার জন্মদিনেই জন্ম হয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রযোজনা সংস্থার।
দাদা বিআর চোপড়ার ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন কাজ করার পর নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তাগিদ এবং একরাশ স্বপ্ন নিয়ে যশরাজ ফিল্মস শুরু করেছিলেন যশ চোপড়া। আজ দেখতে দেখতে পাঁচ দশক পূর্ণ করল এই সংস্থা। এমনিতে মিডিয়া আর গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে দূরে থাকেই ভালোবাসেন যশ রাজ ফিল্মসের বর্তমান কর্ণধার, যশ চোপড়ার বড়ছেলে আদিত্য চোপড়া। তবে বাবার ৮৮তম জন্মবার্ষিকী এবং যশ রাজ ফিল্মসের পাঁচ দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি দীর্ঘ খোলা চিঠি লিখে বাবাকে শ্রদ্ধার্ঘ জানালেন ‘রব নে বানাদি জোড়ি’ পরিচালক।
তিনি লেখেন- ১৯৭০ সাল পর্যন্ত আমার বাবা বিআর ফিল্মসের একজন মাইনে করা কর্মচারী ছিলেন। ওঁনার নিজের বলতে কিছুই ছিল না। ব্যবসা কী করে চালাতে হয় উনি জানতেন না। একটা ছবি প্রযোজনা সংস্থা কীভাবে চালাতে হয় সেই বেসিক জ্ঞানটুকু ওঁনার তখন হয়ে উঠেনি। তবে যেটা উঁনার ছিল তা হল প্রতিভা এবং নিজের পরিশ্রমের প্রতি বিশ্বাস। একটা স্বপ্ন-নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। একটা আত্মবিশ্বাস এবং ওঁনার শৈল্পিক দক্ষতার উপর ভর করে উনি তৈরি করেছিলেন যশ রাজ ফিল্মস।
১৯৯৫ সালে যশ রাজ ফিল্মস রজত জয়ন্তী বর্ষে পা দেয়। সেই বছর মুক্তি পায় আমার পরিচালিত প্রথম ছবি দিলওয়ালে দুলহানিয়া লেযায়েঙ্গে। এই ছবির ঐতিহাসিক সাফল্য আমাকে ভরসা দিয়েছিল- যশ রাজ ফিল্মসের ডানায় কিছু পাগলামিতে ভরা স্বপ্নকে বেঁধে দিতে- আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমার সব সাহসী পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমার বাবা। এবং ১০ বছরের মধ্যে আমরা একটা প্রযোজনা সংস্থা থেকে ভারতের প্রথম স্বাধীন ফিল্ম স্টুডিওতে পরিণত হতে পেরেছিলাম। আমরা গত পাঁচ দশক ধরে আমাদের প্রাচীন আদর্শ,ঐতিহ্য ও চিন্তাধারা গুলোকে আলাদা করিনি নিজেদের থেকে, একই সঙ্গে সাহসী ভাবনা, নতুন চিন্তাগুলোকেও সমান প্রাধান্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। এটাই আমাদের সাফল্যের একমাত্র মূল মন্ত্র'।
যশ রাজ ফিল্মেসর এই বিশেষ দিনটিতে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সকল শিল্পী, কর্মী এবং মানুষকে ধন্যবাদ জানান আদিত্য চোপড়া।
পাঁচ দশক ধরে কভি কভি, সিলসিলা, চাঁদনি, লমহে, ডর, দিল তো পাগল হ্যায়, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লেযায়েঙ্গে, মহব্বতেঁ, বীর-জারা, বান্টি অউর বাবলি, ব্যান্ড বাজা বারাত, চক দে ইন্ডিয়া, সুলতান, টাইগার জিন্দা হ্যায় সিরিজ, ওয়ার,মর্দানির মতো ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছে।
যশ চোপড়ার দুই পুত্র- আদিত্য চোপড়া ও উদয় চোপড়া। আদিত্য পরিচালনার কাজে শুরু থেকেই মন দিলেও অভিনয়কে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন ছোট ছেলে উদয় চোপড়া। যশ রাজের ধুম সিরিজে দেখা গিয়েছে উদয়কে।
২০১২ সালের অগস্ট মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বর্ষীয়ান পরিচালক-প্রয়োজক যশ চোপড়ার। মৃত্যুর পর মুক্তি পেয়েছিল যশ চোপড়া পরিচালিত শেষ ছবি যব তক হ্যায় জান। ছবির ঘোষণা সারার সঙ্গেই যশ চোপড়া জানিয়ে দিয়েছিলেন- এটাই হতে চলেছে তাঁর শেষ ছবি।