এসে গেল ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এর টপ ১৩। আর প্রতিযোগী তালিকায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে বাংলার ছেলে-মেয়েরা জুড়ে রয়েছেন সিংহভাগ জুড়ে। মানে বাংলা থেকে বিজেতা পাওয়ার সম্ভাবনা এবার অনেকটাই বেশি। ঠিক যেরকমটা হয়েছিল ২০২১ সালের সারেগামাপার সময়তেও। চূড়ান্ত বাছাই পর্ব থেকে সারেগামাপা-য় সেইসময় এন্ট্রি হয়েছিল কিঞ্জল চট্টোপাধ্যায়, দীপায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলাঞ্জনা রায়, অনন্যা চক্রবর্তী, রাজশ্রী বাগ আর স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিকদের। আর সবশেষে ট্রফি ওঠে নীলাঞ্জনার হাতে। দ্বিতীয় হয়েছিলেন বাংলারই রাজশ্রী বাগ।
বাংলা থেকে কারা পৌঁছলেন ইন্ডিয়ান আইডল ১৩-র টপ ১৫-তে?
বিদীপ্তা চক্রবর্তী: প্রথমেই আছেন বাংলার মেয়ে বিদীপ্তা চক্রবর্তী। এর আগে বাংলা সারেগেমাপা-তে অংশ নিয়েছিলেন বিদীপ্তা। পৌঁছছিলেন ফাইনালেও। সোদপুরের বাসিন্দা তিনি। সেই ছোট থেকেই রয়েছেন গানের জগতে। অডিশন পর্বে ‘দিল দিওয়ানা বিন সাজনাকে’ গেয়ে বিচারক নেহা-হিমেশকে মুগ্ধ করেছিলেন বিদীপ্তা।
সোনাক্ষী কর: অডিশন রাউন্ডে বিচারকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন সোনাক্ষী লতার বিখ্যাত গান ‘রহে না রহে হাম’ দিয়ে। সুচিত্রা সেনের ‘মমতা’ (১৯৯৬)-র গানও শুনিয়েছিলেন। কলকাতার ১৯ বছরের এই গায়িকা জানিয়েছিলেন ছোট থেকে ইন্ডিয়ান আইডল দেখেই বড় হয়েছেন। শুনে শুনেই অনেক কিছু শিখে নিয়েছেন। তাই নিশ্চিত ইন্ডিয়ান আইডল ১৩-র জার্নি, তিন বিচারক তাঁর জীবনে অনেক কিছুই বদলে দেবেন। প্রসঙ্গত, সঞ্চারীও সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পস ২০১১-তে ছিলেন। এমনকী ইন্ডিয়ান আইডল জুনিয়ার ২০১৩-তেও ছিলেন।
সেঁজুতি দাস: বেলুর মঠ, হাওড়ার মেয়ে সেঁজুতি। গঙ্গার পাশেই থাকেন তিনি। বলিউড ক্লাসিক্যাল আর সেমি ক্লাসিক্যাল ঘরনার গান তাঁর ঘরনা। তবে সব ধরনের গান গাইতে চান তিনি ইন্ডিয়ান আইডলে। ইতিমধ্যে শো-তে অনেকেই তাঁকে নেহা কক্করের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন।
সঞ্চারী সেনগুপ্ত: সুপার সিঙ্গার জিতেছিলেন কসবার সঞ্চারী। এমনকী প্লেব্যাকের দুনিয়াতেও পা রেখে ফেলেছেন। যিশু-শোলাঙ্কির ‘বাবা বেবি ও’-তে তিনি গা গেয়েছেন। শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে 'বাঁধনে বাঁধিব' গানটি গেয়েছেন সঞ্চারী। তাই সঞ্চারীকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে কলকাতাও। সঞ্চারী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘অপেরা মিউজিক ভারতে অতটা প্রচলিত নয়। তাই আমি চাই বলিউডের গানের সঙ্গে অপেরা মিশিয়ে তা সবার সামনে থুলে ধরতে। যার সুযোগ আমাকে এই মঞ্চ দেব। আমি খুব আশাবাদী।’
অনুষ্কা পাত্র: জি টিভির সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পস (২০১৯)-এর ফাইনালিস্ট ছিলেন অনুষ্কা। বাড়ি নিউ আলিপুরে। সন্দীপ ভৌমিক ও সীমান্ত সরকারের ললিত কলা আকাদেমি থেকে সংগীত শিক্ষা অনুষ্কার। ইতিমধ্যে তিন বিচারক বিশেষ করে বিশাল দাদলানির মন কেড়ে নিয়েছেন। ও হ্যাঁ, অনুষ্কার সঙ্গে সেলফি তুলে নিয়েছেন হিমেশ। খোদ পঞ্চমদা মানে আরডি বর্মনের গলা নকল করতে পারে বাংলার এই কন্যে। জি বাংলার সারেগামাপা ২০২১-র ‘কালিকাপ্রসাদ স্মৃতি পুরস্কার’ ও ‘ভিউয়ার্স চয়েস পুরস্কার’ও পেয়েছিলেন তিনি।
প্রীতম রায়: সংগীতের মহাযুদ্ধের ফাইনালিস্ট ছিলেন প্রীতম রায়। এবার তিনি ইন্ডিয়ান আইডলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁর প্রায় ১৭ হাজার ফলোয়ার্স। জি বাংলার সারেগামাপা-তেও দেখা মিলেছিল তাঁর। রাজ্য সংগীত একাডেমি থেকে গানের তালিম নিয়েছেন। কাজ করেছেন মিউডিক ভিডিয়ো ‘দিন চলে যায়’-তে।
দেবস্মিতা রায়: তাঁর সুরেলা গলা চোখে জল এনে দিয়েছিল হিমেশ রেশামিয়ার। জনপ্রিয় ‘রোজরোজ আঁখো তালে’ গানটি গেয়েছেন দেবস্মিতা এর আগে। যা ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বঙ্গকন্যার এহেন পারফর্মেন্সে রীতিমত গর্বিত বাংলার মানুষজন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ইন্ডিয়ান আইডল ১২-র মঞ্চ কাঁপিয়েছিলেন বনগাঁর মেয়ে অরুণিতা কাঞ্জিলাল। ফাইনালে পৌঁছন তিনি। তবে হেরে যান পবদনদীপ রাজনের কাছে। শো-তে দুজনের প্রেমের খবরও বেশ চাউর হয়েছিল। যদিও অরুণিতার দাবি ছিল সেসব নিছকই মজা, সত্যি নয় মোটেই।