বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > Abar Bibaho Obhijaan Review: 'আবার বিবাহ অভিযান'-এর ফাঁদে অনির্বাণ-রুদ্রনীল-অঙ্কুশ! কেমন হল সৌমিকের ছবি

Abar Bibaho Obhijaan Review: 'আবার বিবাহ অভিযান'-এর ফাঁদে অনির্বাণ-রুদ্রনীল-অঙ্কুশ! কেমন হল সৌমিকের ছবি

'আবার বিবাহ অভিযান'-এর ফাঁদে অনির্বাণ-রুদ্রনীল-অঙ্কুশ

Abar Bibaho Obhijaan Review: মুক্তি পেল সৌমিক হালদারের নতুন ছবি আবার বিবাহ অভিযান। বিদেশের মাটিতে বউদের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে গিয়েছিল তিন বন্ধু। সঙ্গে বিপুল সম্পত্তির আশা। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোন গেরোয় পড়ল তাঁরা? সেটাই বলবে এই ছবি। কিন্তু কেমন লাগল? জানাচ্ছে HT বাংলা।

আমার দুঃসাহসটা ভাবুন একবার, একবারও বিয়ে না করে ‘আবার বিবাহ অভিযান’-এর সাক্ষী থাকলাম। আর সৌমিক হালদারের ছবি দেখে একটুকু মানে মানে বুঝে গিয়েছি যে এটা সত্যিই দিল্লি কা লাড্ডু, খেলেও পছতাতে হবে, না খেলেও! সে যাক গে এবার আসা যাক ছবির গল্প টল্পে, কেমন লাগল টাগল সেই বিষয়ে। ছবির ভাষায় উত্তর দিই? 'দারুণোস্কি ভালো লেগেস্কি!' বিস্তারিত? বলছি, বলছি।

রজত আর অনুপম সেই ছোট্টবেলার বন্ধু। কিন্তু আগের বিবাহ অভিযানের পরে তাঁদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। এখন তাঁদের জীবনে একটাই মন্ত্র 'বউই ধর্ম, বউই কর্ম...'। দুজনেই বউয়ের কথায় ওঠে আর বসে। অনুপম অফিসের পর বাড়ি ফিরে বউয়ের 'ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও' রাত পার্টির জন্য চিকেন রোস্ট বানায় আর সকালে অফিসে গিয়ে আন্দোলন করে বউয়ের অনুপ্রেরণায়। আর ‘লজিক্যাল’ রজত এখন পুরোপুরি ‘স্পিরিচুয়াল’ মানুষের পরিণত হয়েছে। গলায় মাদুলি, ১০ আঙুলে ২০টা পাথর। সারাক্ষণ হাতে ধুপ ধুনো। এমন 'স্বস্তি'র জীবনে আচমকাই আগমন ঘটে বুলেট সিং ওরফে গণশা মাইতির। ২৫ কোটির লোভে তাঁদের গোটা জীবনটাই হুরহুর করে পাল্টে যায়! বিপদের গুঁতোয় পড়ে তাঁরা 'বোন টু বোন' বুঝে যায় বউরা নিপীড়ন করলেও তাঁরাই বাইরের বিপদের হাত থেকে বাঁচায়। কীভাবে? সেটা বলে দিলে সৌমিক বাবু নির্ঘাত আমায় বকা দেবেন। ওটা সিনেমা হলে গিয়ে দেখাই ভালো!

এবার আসি সিনেমা প্রসঙ্গে। এক সেকেন্ড... সিনেমা পরে, আগে অনির্বাণের নাচ। আরে দাদা আপনি এত ভালো নাচেন বলেননি তো? তাজ্জব বনে গেলাম এই মানুষটার নাচ দেখে। গান, অভিনয়ের পাশাপাশি এই গুণটার কথা বিশেষ জানা ছিল না। রুদ্রনীলকেও নাচতে দেখা গিয়েছে এই গল্পে। সেও এক অনন্য দৃশ্য!

তবে এই গল্পের একমাত্র ইউএসপি এর স্ক্রিপ্ট! হাসতে হাসতে পেট ব্যথা করিয়ে ছাড়বে ঠিক যেভাবে ছবিতে অনুপম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেখে রাশিয়ান ভাষা শিখে সবার থুড়ি সব শব্দের পিছনে 'স্কি' যোগ করতে শিখেছে একদম অমন ভাবেই। অকারণ গুঁতো মেরে হাসান নয়, ঝরঝরে মজার স্ক্রিপ্ট। অঙ্কুশের হিউমার সেন্স এবং টাইমিং নিয়ে কোনও কথাই হবে না! একই বক্তব্য রুদ্রনীলকে নিয়েও। আর গনশা তো তাঁর ‘উসচারণের’ জন্যই মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। সেই প্রথমবারের রেশ এই ছবিতে একই রকম ভাবে বজায় আছে। এটুকু বোর করেনি কোথাও। অনির্বাণের ‘কালচুরাল’ জ্ঞান একবারে কিডনি টাচ করে যাওয়ার মতো।

সৌমিক হালদারের পরিচালনা অনবদ্য। ক্যামেরার কাজ, মেকআপ বিশেষ করে শেষ দৃশ্যে রুদ্রনীলের ওই সাজ বেশ ভালো। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনা আরও একবার মুগ্ধ করল।

এবারের ছবিতে প্রিয়াঙ্কার ভূমিকা তুলনায় কম। কিন্তু যতটা আছে মন্দ নয়। সোহিনী এবং নুসরত বেশ ভালো। সৌরভ দাসের চরিত্র নতুন করে রাশিয়ান ভাষা শেখাবে। তাঁর ওই কাকের বাসা চুলের জন্য আলাদাই লুক এসেছিল এখানে।

ছবির শুরুতেই অনির্বাণ দেবরাজের গলায় আবার বিবাহ অভিযানের যে টাইটেল ট্র্যাক বেজে উঠল আর আসর জমল সেই মেজাজ শেষ পর্যন্ত বহাল ছিল! প্রতিটা গান বেশ ভালো। ওভার অল ফাটাফাটি! সপরিবারে হইহই করে হাসতে হাসতে দেখার মতো ছবি।

শেষ হয়েও হইল না শেষ, এই ছবি আপনাকে শেখাবে সরস্বতী মন্ত্র দিয়েও বিয়ে দেওয়া যায়, বউদের অপার মহিমা, 'ঠাকুর বলেছেন মুছে যাও শুকানোর আশা করো না'র মতো কিছু অমোঘ সার সত্য। এবং অবশ্যই কনডম দিয়ে কী করে চোখে ভাপ দিতে হয় সেটাও!

ছবি: আবার বিবাহ অভিযান

পরিচালক: সৌমিক হালদার

রিভিউ: 'দারুণোস্কি ভালো লেগেস্কি'।

রেটিং: ৪.৬/৫

বন্ধ করুন