মুম্বইয়ে নতুন সম্পত্তি কিনলেন অভিষেক বচ্চন। সম্প্রতি মুম্বইয়ের বোরিভালি এলাকায় ওবেরয় রিয়েলটির বিলাসবহুল প্রকল্প ‘ওবেরয় স্কাই সিটি’তে ১৫.৪২ কোটি টাকায় জুনিয়র বচ্চন মোট ছয়টি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বলে জানা যাচ্ছে। Zapkey.com শেয়ার করা নথি অনুসারে, বলিউড অভিনেতা ৩১,৪৯৮ টাকা স্কোয়ারফিট দামে মোট ৪,৮৯৪ স্কোয়ারফিট রেরা কার্পেট কিনেছেন।
চুক্তিতে দেখা গিয়েছে, ছয়টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ২টি অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন ২৫২ বর্গফুট, ২টি অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন প্রায় ১১০০ স্কোয়ারফিট এবং অন্য ২টি অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন ১০৯৪ স্কোয়ারফিট করে বলে জানা গিয়েছে। এই লেনদেনের আকর্ষণীয় বিষয় হল অভিষেক বচ্চন ২৫২ স্কোয়ারফিটের দুটি ছোট অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন যা সম্ভবত একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট বলে মনে করা হচ্ছে। যেটিকে বিল্ডাররা সাধারণক ১ আর কে (রুম কিচেন) অ্যাপার্টমেন্ট বলে থাকেন।
২৫২ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট কেন কিনেছেন অভিষেক?
জানা যাচ্ছে, যখন ডেভেলপাররা শিল্প জমি ক্রয় করেন, তখন সেই শিল্প জমিকে আবাসিক ব্যবহারে পরিণত করার জন্য তাঁদের যে শর্তগুলি পূরণ করতে হয় তা হ'ল প্রকল্পের একটা অংশে সাশ্রয়ী মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা। এক বিল্ডার সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমস ডিজিটালকে জানান, এই কারণেই বেশ কয়েকজন ডেভেলপার ছোট ও বড় অ্যাপার্টমেন্টের মিলিয়ে বিল্ডিং তৈরি করেন।
ওবেরয় রিয়েলটির ওবেরয় স্কাই সিটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে, সংস্থাটি ২০১৪ সালে একটি ই-নিলামে টাটা স্টিল লিমিটেডের কাছ থেকে ১,১৫৫ কোটি টাকায় ২৫ একর জমি পার্সেল অধিগ্রহণ করেছিল। বোরিভালির ওই জমিতে টাটার ইস্পাত তারের উৎপাদন কারখানা ছিল। ২০০৮ সালে সংস্থাটি মহারাষ্ট্রের তারাপুরে কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার পরে এটা বন্ধ হয়ে যায়।
রিয়েল এস্টেট অ্যানালিটিক্স ফার্ম Zapkey.com-এর শেয়ার করা তথ্য অনুসারে, ওবেরয় স্কাই সিটি প্রকল্পে ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৭,৩৯৮ কোটি টাকার মোট ২,৫১২টি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে। ২,৫১২টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৭,৩৩২ কোটি টাকার ২,৪৯৩টি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করেছে ডেভেলপার এবং ৬৬ কোটি টাকার ১৯টি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে রিসেল লেনদেনে।
মহারাষ্ট্র রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটির (মহারেরা) ঘোষণা অনুসারে, থানের কোলশেটে ওবেরয় রিয়েলটির ফরেস্টভিল প্রকল্পে, বিকাশকারী ৩,৪ টি এবং ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্ট সহ স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করছে।
ছোট অ্যাপার্টমেন্টগুলি বড় অ্যাপার্টমেন্টের সঙ্গে জোড়ি হিসাব বিক্রি করা হয়
নিয়ম পূরণের জন্য, শিল্প জমিকে আবাসিক ব্যবহারে রূপান্তর করার জন্য কিছু ডেভেলপার ছোট-বড় অ্যাপার্টমেন্ট সমন্বিত টাওয়ার নির্মাণ করন। ছোট অ্যাপার্টমেন্টটি বড় অ্যাপার্টমেন্টের সঙ্গে মিলিয়ে জোড়ি হিসাবে বিক্রি করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুম্বইয়ের এক শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সঙ্গে কাজ করা এক স্থপতি একথা বলেছেন।
তিনি বলেন, 'ছোট ও বড় অ্যাপার্টমেন্ট আলাদা টাওয়ারে না রেখে একসঙ্গেই তৈরি করেন ডেভেলপাররা। এই ইউনিটগুলি তাই 'পাশাপাশি তৈরি' করা হয় এবং জোড়ি হিসাবে বিক্রি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বিক্রি করা হয় এবং পরে বাড়ির মালিকরা একসঙ্গে জুড়ে নেন।
তাঁর কথায়, ‘স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট (ছোট অ্যাপার্টমেন্ট) একটা অতিরিক্ত শয়নকক্ষ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা সেটাকে পুজোর ঘর, স্টাডি রুম কিংবা হোম অফিস হিসাবে ব্যবহার করেন।’
তবে অভিষেক বচ্চনের ক্ষেত্রে ছয়টি অ্যাপার্টমেন্ট আলাদাভাবে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অভিষেক বচ্চনের সম্পত্তির তালিকায় বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। দ্য ওবেরয় রিয়েলটি প্রকল্প যেখানে অভিষেক বচ্চন ছয়টি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন তা বলিউড তারকার প্রথম কেনা নয়। এর আগেও একই ডেভেলপারের প্রজেক্টে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। ২০২১ সালের অগস্টে ওরলির ওবেরয় রিয়েলটির ওবেরয় ৩৬০ ওয়েস্ট প্রকল্পে মুম্বইয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৪৫.৭৫ কোটি টাকায় বিক্রি করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। ২০১৪ সালে ৪১ কোটি টাকা দিয়ে সেই অ্যাপার্টমেন্টটি কিনেছিলেন অভিষেক।