নীল নয়নার রূপের জাদুতে আজও মুগ্ধ গোটা বিশ্ব। মিস ওয়ার্ল্ডের খেতাব তো তাঁর সঙ্গে রয়েছই, এর বাইরে ঐশ্বর্য একজন দায়িত্বশীল মা এবং আদর্শ স্ত্রী। অন্যজন বলিউড শাহেনশার একমাত্র পুত্র এবং প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা। দেখতে দেখতে দাম্পত্য জীবনের ১৩ বছর পার করে ফেললেন অভিষেক-ঐশ্বর্য।
২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্য রাই। দেখতে দেখতে একসঙ্গে পথচলার ১৩ বছর অতিক্রান্ত। এই জুটির প্রেম, বিয়ে থেকে দাম্পত্য সম্পর্ক, সবই চর্চায় থেকেছে হামেশা। ২০০৯ সালে জনপ্রিয় মার্কিন সঞ্চালিকা ওপেরা উইনফ্রে-র শো'তে দ্বিতীয়বার হাজির হয়েছিলেন ঐশ্বর্য। এবং সেইবার অ্যাশের সঙ্গে অনুষ্ঠানে হাজির হন অভিষেক বচ্চনও।
সাক্ষাত্কার চলাকালীন ওপেরা উইনফ্রে-র একাধিক প্রশ্নবাণেবিদ্ধ হয়েছিলেন এই জুটি, তবে প্রত্যেক প্রশ্নের সপাট জবাবও দিয়েছিলেন অ্যাশ-অভিষেক। ওপেরা সরসরি ঐশ্বর্যকে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কখনও পর্দায় চুমু খাওনি কেন?’ ঐশ্বর্য দ্রুত অভিষেকের দিকে ফিরে বলেন, ‘গো অন বেবি…’। এরপরই অভিষেক স্ত্রীর গালে আলতো চুমু খান। হাসি চেপে রাখতে পারেননি ওপেরাসহ উপস্থিত দর্শকরা।
এরপর অভিষেক বিস্তারিতভাবে জানান কেন ভারতীয় অকারণে চুমু খাওয়ার প্রয়োজন থাকে না। তিনি বলেন, ‘এটা পশ্চিমী সংস্কৃতিতে যতখানি সাধারণ চোখে দেখা হয়, ভারতের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তেমন নয়। আমার মনে হয় না ভারতীয় দর্শক চুম্বনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। যেমন ধরুন, ভারতীয় ছবিতে যদি এমন কোনও দৃশ্যের পরিকল্পনা হয়- যেখানে একটা ছেলে একটা মেয়েকে দেখবে, ভালোবাসবে এবং এরপর এক অপরকে নিজেদের মনের কথা বলবে, তাহলে ভালোবাসার অভিব্যক্তি হিসাবে পশ্চিমী ছবিতে তাঁরা একে অপরকে চুমু খাবে আর বলিউডের ছবিতে একটা রোম্যান্টিক গান শুরু হয়ে যাবে। সেটা কি বেশি ইন্টারেস্টিং নয়? অন্তরঙ্গ একটা মুহূর্ত শুরু হবে…তারপরেই একদম সোজা কোনও বরফঢাকা পাহাড়ে পৌঁছে যাবেন আপনি..এরপর নাচ-গান। সেটা তো বেশি মনোগ্রাহী। আমার তো তাই মনে হয়’। স্বামীর সুরে সুর মিলিয়ে ঐশ্বর্য বলেন,'হ্যাঁ আমাদের গানের দৃশ্য থাকে সঙ্গে সঙ্গে, এটা দারুণ মজার'।
একসঙ্গে একাধিক ছবিতে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন এই রিয়েল লাইফ জুটি। ‘ধাই অক্ষর প্রেম কে’ (২০০০), ‘কুছ না কহো’ (২০০৩), উমরাও জান এবং ধুম টু (২০০৬), গুরু (২০০৭) এবং রাবণ (২০১০)। অভিষেক নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন উমরাও জান ছবির শ্যুটিং চলাকালীনই ঐশ্বর্যর প্রেমে পড়েন তিনি।
বিয়ের চার বছরের মাথায় ২০১১ সালে মেয়ের জন্ম দেন ঐশ্বর্য। আরাধ্যাকে নিয়েই ঐশ্বর্য-অভিষেকের সুখী গৃহকোণ। রাবণের পর দীর্ঘ ১১ বছর রুপোলি পর্দায় একসঙ্গে দেখা যায়নি জুনিয়ার বচ্চন ও নীল নয়নাকে। আরাধ্যার জন্মের পর গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে নিজেকে অনেকখানি গুটিয়ে নিয়েছেন ঐশ্বর্য। বক্স অফিসে অভিনেত্রীকে শেষ দেখা গিয়েছে 'ফ্যানি খান' ছবিতে।আপাতত মণিরত্নমের ‘পুণ্যিয়ানি সেলভান’ ছবির শ্যুটিং-এর কাজে হাত দিয়েছেন ঐশ্বর্য।এই পিরিয়ড ড্রামা হতে চলেছে ঐশ্বর্যর তামিল ছবির দুনিয়ায় কামব্যাক। অন্যদিকে অভিষেকের শেষ রিলিজ ছিল ‘বিগ বুল’। করোনা আবহে সরাসরি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি।